উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ২৫ শে মার্চ ২০২২ : শুক্রবার : এ যেন উল্টো পূরান। কেউ চা বিক্রি করে প্রধানমন্ত্রী আবার কেউ ৩০ বৎসর পঞ্চায়েত প্রশাসনের পদে থাকার পরেও চা বিক্রেতা।
তিনি হলেন জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের আর.এস.পি.-র টিকিটে বাম সংযুক্ত মোর্চার তরফে বিধানসভা ভোটের প্রার্থী নরেশ চন্দ্র রায়। এত বছর প্রশাসনিক পদ সামলানোর পরেও এখন ময়নাগুড়ির হুসলুডাঙ্গা টোল প্লাজার সামনে চা বিক্রি করে দিন যাপন করতে হচ্ছে তাকে। মাত্র কয়েক বছর পঞ্চায়েত প্রশাসনের পদে থাকায় কারো-কারো বিরুদ্ধে ভুরিভুরি দুর্নীতির অভিযোগে উঠে। কিন্তু এই ব্যাপারে নরেশ বাবু একেবারেই এক জন ব্যতিক্রমী মানুষ। তাই তো নরেশ বাবুর সংসার চালানোর ভরসা চায়ের দোকান। নরেশ বাবুর এই সততার জন্য কুর্নীশ জানাতে ভোলে না গ্রামবাসী সহ বিরোধীরা। এমনকি নরেশ বাবুর সততার প্রশংসা করেছে খোদ ময়নাগুড়ির তৃনমূল কংগ্রেসের ১ নং ব্লক সভাপতি মনোজ রায়। তিনি জানিয়েছেন, নরেশ চন্দ্র রায় দীর্ঘদিন পঞ্চায়েত সদস্য, সহ উপ-প্রধান এবং প্রধানের পদে থাকার পরেও সততার সাথে কাজ করে গেছেন।
জানা গেছে, ছোট বেলায় বামপন্থী ছাত্র আন্দোলন এবং বামপন্থী চিন্তা ধারনার প্রতি আকৃষ্ট হন নরেশবাবু। এরপর তিনি ১৯৭৩ সালের ভুখা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৮৮ সালে পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবে ময়নাগুড়ি চুড়াভান্ডারের গ্রাম পঞ্চায়েত ভাঙ্গারহাট এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ক্রমাগত ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৩০ বছর পঞ্চায়েত পদে আসীন ছিলেন। এর মধ্যে তিনি ৫ বছর উপ প্রধান এবং ৫ বছর প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তার ছেলে নবেন্দু রায় পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়ায় কয়েক ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলের কাছে পরাজিত হন। বামের দুঃসময়ে সঙ্গীরা ছেড়ে অনান্য দলে যোগদান করলেও খোদ নরেশবাবু দল ছাড়েনি। গত বিধানসভা ভোটে বাম সংযুক্ত মোর্চার হয়ে দাঁত কামড়ে লড়াই করেছেন। আর নরেশ বাবুর এই মানষিকতার জন্য একবাক্যে এলাকায় তাকে সততার প্রতিক হিসেবে সকলেই কদর করে।