উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ১৪ ই এপ্রিল ২০২২ : বৃহস্পতিবার : প্রতিবছর মালবাজার মহকুমার সাওগাও তিস্তা নদী এলাকায় চলে সেনাবাহিনীর ফায়ারিং এর অনুশীলন। ১২ মাসের বিভিন্ন সময়, সেনাবাহিনীর বিভিন্ন রেজিমেন্ট এই এলাকায় ফায়ারিং অনুশীলন করে থাকে। আর এদিন দিন সেনাবাহিনীর ফায়ারিং এলাকায় ঢুকে যায় বেশকিছু গৃহপালিত মোষ। আর সেই সময় সেনাবাহিনীর ফায়ারিং এ মারা যায় ১৬ টি মোষ, আহত আরও চারটি মোষ।
মৃত মোষের মালিক ভীম দর্জি বলেন, আমার বাড়ি মালবাজার মহকুমার বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের ওয়াসাবাড়ি চা-বাগানের কলাগাথি ডিভিশনে। আমি মোষ পালন করেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। এদিন আমার বাড়ির গোয়ালা বাড়ির ২০ টি মোষ নিয়ে তিস্তার নদীর পাশে চরাতে গিয়েছিলো। আর সেই সময় আমি মোষের দুধ বিক্রি করতে বাজারে যাই। আমার গোয়ালা তিস্তা নদীর আশেপাশে মোষগুলো চড়াচ্ছিলো। সেই সময় প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হয়। আমার গোয়ালা বৃষ্টির কারনে একটি গাছের নিচে আশ্রয় নেয়। তখন মোষগুলো খাস খেতে খেতে সেনাবাহিনীর ফায়ারিং এরিয়ায় চলে যায়। তড়িঘড়ি গোয়ালা মোষগুলোকে ফায়ারিং এরিয়া থেকে বার করে আনতে থাকে, আর তখনই সেনাবাহিনীর ফায়ারিং অনুশীলনে ১৬ টি মোষের মৃত্যু হয়। কোন ক্রমে বেচে যায় গোয়ালা। খবর পেয়ে তিস্তার নদী এলাকায় গিয়ে দেখি, ছড়িয়ে ছিটিয়ে মোষের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। চারটি মোষ গুরুতর আহত অবস্থায় তিস্তার চরে পরে রয়েছে। সম্ভবত মোষগুলিও বাচবে না।
আমরা গরীব মানুষ এই মোষ পালন করেই সংসার চালাই। এখন কি ভাবে সংসার চলবে তা বুঝতেই পারচ্ছিনা। এখানে সেনাবাহিনীর কোন দোষ নেই। কারন সেনাবাহিনী আগে থেকে তাদের ফায়ারিং এলাকা চিহ্নিত করে লাল ঝান্ডা লাগিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু মোষতো অবলা প্রানী। কিছু বুঝতে না পেরে ফায়ারিং জোনে চলে যায়। তাই সেনাবাহিনী বা সরকারের কাছে আমার আবেদন, যদি আমাকে কোন ভাবে সাহায্য করে। কলাগাথি এলাকার বাসিন্দা সীমা দর্জি বলেন, এক সঙ্গে এতগুলো মোষের মৃত্যু, খুব দুঃখজনক ঘটনা। জানি এখানে সেনাবাহিনীর কোন দোষ নেই। তবুও বিরাট ক্ষতি হয়ে গেলো ভীম দর্জির। মোষ পালন করেই আয় করতো সে। আমরা চাই সরকারি সাহায্য যাতে পায় ভীম দর্জি।