উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ১ লা মে ২০২২ : রবিবার : “প্রজাপতি প্রজাপতি, কোথায় পেলে তুমি এমন রঙ্গিন পাখা” – গানের এই কলিতেই প্রজাপতির সুন্দর রুপের বর্ণনা রয়েছে। আমাদের আশেপাশে উড়ে বেরানো এই পতঙ্গের জীব জগতে এক বিরাট ভুমিকা রয়েছে। কত রকমের পতঙ্গ আমাদের এই এলাকায় রয়েছে। তাদের বর্তমান অবস্থান কি। নতুন কোন প্রজাতির আছে কি না? এ সব জানতে কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকের সামসিংয়ের পাহাড়ি গ্রাম সুন্দরী বস্তীতে শুরু হলো ৫ দিনের প্রজাপতি ও মথ পর্যবেক্ষণ শিবির।
উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন পরিবেশ প্রেমী সংস্থা হিমালয়ান ন্যাচার এন্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই শিবিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজ্যের ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার টি.আর. প্রধান। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল (উত্তরবঙ্গ) উজ্জ্বল ঘোষ, প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ যুধাজিৎ দাশগুপ্ত, রুদ্রপ্রসাদ দাস, অংশুমান রাহা, ফুল বিশেষজ্ঞ শুভদীপ সেন, নেওরাভ্যালি লোয়ার রেঞ্জের রেঞ্জার এস.এস. গিরি সহ অন্যান্যরা। উদ্বোধন করে টি.আর. প্রধান বলেন, পর্যটকরা বড় প্রাণী দেখতে উত্তরবঙ্গে আসে। কিন্তু প্রজাপতি যে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে তার জন্য বনবিভাগ বিশেষ চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য এ রকম শিবিরের গুরুত্ব দেয়। প্রজাপতি ও অন্যান্য কীট পতঙ্গদের সম্পর্কে জানতে এই শিবিরের ভুমিকা রয়েছে। উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ছোট ছোট কীটপতঙ্গ এই জীবজগতে বিরাট ভুমিকা পালন করে। পাশাপাশি পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এই জন্য বনদপ্তরের বক্সা ও গরুমারাতে দুটি প্রজাপতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র আছে। আরও পর্যবেক্ষণ বাড়াতে বন দপ্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ যুধাজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, মথ, প্রজাপতি, মাছি সহ ছোট-ছোট কীটপতঙ্গদের আমাদের জীব বৈচিত্র্যে ভুমিকা রয়েছে। প্রজাপতি, মৌমাছি ফুলের পরাগ মিলনে ভুমিকা পালন করে। মাছি মৃত জৈব বস্তুকে দ্রুত মাটিতে মিশিয়ে দেয়। আমাদের এই দিকে ভূটান গ্লোরি, গর্গন, মর্মর সহ প্রায় ৪০০ প্রজাতির প্রজাপতি দেখা যায়। পৃথিবীতে প্রায় ১৮০০০ প্রজাতির প্রজাপতি এবং ১০৬০ প্রজাতির মথ দেখা যায়। এখানে আরও কোনো প্রজাতি আছে কি না, তার জন্য এই শিবির কর্যকরি হবে। আয়োজক সংস্থার কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, এটা আমাদের ২য় শিবির। প্রথমটি হয়েছিল বক্সাতে। আজ দ্বিতীয় ৫ দিবসীয় শিবির শুরু হলো। এখানে শিলিগুড়ির আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজের অধ্যাপিকা নীনা মুখার্জি তার দুই ছেলে চিত্রক ও অলোর্ক কে নিয়ে এসেছেন। কলকাতা থেকে হিমঝুড়ি রায় ও সৌপর্ণ রায় এসেছেন। এদের মতো ২৫ জন এই শিবিরে যোগ দিয়েছেন। আগামী ৪ মে পর্যন্ত এই শিবির চলবে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ও আকাশে মেঘের গুরুগম্ভীর গর্জনের মাঝে আগত শিক্ষার্থী ও পর্যবেক্ষকদের মধ্যে যথেষ্ট উদ্দিপনা দেখা গেল এদিন।