উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৫ ই মে ২০২২ : বৃহস্পতিবার : জেলার রেশম চাষে ফের আশার আলো দেখাল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারত সরকারের নীতি আয়োগের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার কালিয়াচকের রেশম চাষ পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখে। দলের প্রতিনিধিরা রেশমচাষী এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কথা বলেন। যদিও এনিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি তাঁরা। তবে তাঁদের এই পরিদর্শনে এলাকার রেশমচাষীদের মধ্যে নতুন করে উৎসাহ দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারত সরকারের নীতি আয়োগের তরফে চার জনের একটি প্রতিনিধি দল কালিয়াচকের রেশম চাষ খতিয়ে দেখে। দলের নেতৃত্বে ছিলেন নীতি আয়োগের প্রতিনিধি মধুমিতা শর্মা। উওপস্থিত ছিলেন মালদা জেলা সেরিকালচার দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর অভিজিৎ গোস্বামী এবং কেন্দ্রীয় রেশম পর্ষদের দুই বিজ্ঞানী ডঃ জি শ্রীনিবাস ও ডঃ বি ভি নাইডু। তাঁরা তুঁতচাষ থেকে শুরু করে রেশম সুতো উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায় খতিয়ে দেখেন। এনিয়ে মধুমিতা শর্মা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে মালদা জেলা রেশম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। এখানে কী ভাবে রেশম উৎপাদিত হয়, তার মান কেমন, রেশমচাষীরা কী ভাবে কাজ করছেন, সে সব আজ আমরা খতিয়ে দেখলাম। এখানকার চাষীরা সরকারি সহায়তার সঙ্গে কিছু সমস্যা নিয়ে রেশম উৎপাদন করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে দেশ জুড়ে রেশমের উপর আমাদের একটি সমীক্ষা চলছে। বিষয়টি গোপনীয় হওয়ায় তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আমি কিছু জানাতে পারছি না। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে রেশম উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাষিদের কী সমস্যা রয়েছে, তাঁদের কী কী প্রয়োজন, এই চাষে নতুন কি প্রকল্প নেওয়া যেতে পারে, চাষিরা কী সুবিধে পাচ্ছেন, তাঁদের আর কী সুবিধে প্রয়োজন, সে সব নিয়েই এই সমীক্ষা। আমরা চাষিদের কাছ থেকেই এসব জানার চেষ্টা করছি। এনিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। আমরা মালদায় বিভিন্ন ধরনের রেশম দেখতে পেলাম। সব মিলিয়েই আমরা একটি রিপোর্ট তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দেব।
উল্লেখ্য, মালদা জেলায় প্রায় ২১ হাজার একর জমিতে তুঁতের চাষ করা হয়। জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকে চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি রেশম উৎপাদন হয় কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে। গোটা জেলায় এই চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছেন অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ। প্রায় ৬১ হাজার পরিবার এই চাষ থেকেই গ্রাসাচ্ছাদন করে থাকে। এই জেলায় প্রতি বছর রেশমচাষের ছ’টি মরশুম। বছরে গড়ে রেশম সুতো উৎপাদন হয় প্রায় ১৫০০ মেট্রিক টন। এই রেশম সুতো মূলত উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় রফতানি করা হয়। কালিয়াচকে পাইকারি রেশম বাজার রয়েছে। তবে চাষিদের দীর্ঘদিনের দাবি, এই জেলাতেই রেশম সুতো থেকে বস্ত্র তৈরির কারখানা করা হোক। তাতে জেলার রেশমচাষের পরিধি আরও বাড়বে। আজও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের কাছে সেই দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।