উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : ১৯ ই মে ২০২২ : বৃহস্পতিবার : অবিলম্বে ন্যূনতম মজুরি চালু, কয়েক পুরুষ ধরে চা-বাগানের জমিতে বাস করা চা-শ্রমিকদের অবিলম্বে জমির পাট্টা প্রদান, চা শিল্পের উন্নতি সাধনের মধ্য দিয়ে সমগ্র উত্তরবঙ্গের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন, চা-সুন্দরী প্রকল্পের নামে চা-শ্রমিকদের জমির অধিকার থেকে বঞ্চিত করে চা-বাগানের জমি ঘুরপথে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত বন্ধ করা সহ চা-শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে জয়েন্ট ফোরামের ডাকে বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি শহরে মিছিল করে জেলা শ্রম আধিকারিক এর কাছে ডেপুটেশন দিল জয়েন্ট ফোরাম।
সমাজপাড়া মোড় থেকে এই মিছিল বের হয়ে শহর পরিক্রমা করে কদমতলা সংলগ্ন জেলা আধিকারিক এর দপ্তরে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে শ্রমিকদের দাবির স্বপক্ষে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাবলু.বি.এস.ইউ. নেতা অখিল বন্ধু সরকার, চা-শ্রমিকদের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ দাবি-দাওয়া নিয়ে বক্তব্য রাখেন এ.আই.সি.সি.ইউ. এর পক্ষে প্রদীপ গোস্বামী, চা-বাগান মজদুর ইউনিয়ন এর নেতৃত্ব প্রফুল্ল লাকড়া, এন.ইউ.পি.ডব্লিউ. এর পক্ষে দেবব্রত নাগ, এন.বি.টি.পি.ই.ইউ. এর পক্ষে জীবন সরকার, ডি.সি.বি.ডব্লউ.ইউ. এর পক্ষে প্রকাশ রায়, সি.আই.টি.ইউ. নেতৃত্ব শুভাশিস সরকার সহ চা-শ্রমিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। শাসকদলের ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন সময় জয়েন্ট ফোরামের আন্দোলনকে ছোট করে দেখানোর স্বার্থে কোন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের তৈরী শ্রমিক মঞ্চ বলে চা শ্রমিকদের যৌথ আন্দোলনকে ছোট করে দেখাতে চাইছে। চা শ্রমিক নেতা প্রফুল্ল লাখরা জানান, ২০২ টাকা হাজিরা চা-শ্রমিকদের পরিবার চলে না মজুরি বৃদ্ধি না হওয়ার কারনে, অনেকে এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা চা শ্রমিকের কাজে যুক্ত হতে চাচ্ছে না। আবার অনেকে চা-বাগান ছেড়ে অন্যত্র কাজের জন্য চলে যাচ্ছে। আজ বিভিন্ন চা বাগানের চা-শ্রমিকরা ম্যানেজমেন্ট এর কাছে ন্যূনতম মজুরি অবিলম্বে চালু করা, পাট্টা প্রদান করা, রেশনের অধিকার থেকে চা-শ্রমিকদের বঞ্চিত না করা সহ বিভিন্ন দাবিতে স্মারকলিপি জমা করে চা-শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে জেলা শ্রম আধিকারিক এর নিকট দাবি পত্র জমা দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। চা-বাগানের বাইরের বৃহত্তর সমাজ যাতে চা-শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনে তাদের প্রাপ্য ন্যায্য দাবি আদায়ের পক্ষে তাদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই এর আগে জলপাইগুড়ি শহরের মাদ্রাসা মাঠে কনভেনশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল জয়েন্ট ফোরামের উদ্যোগে। আগামীতে মালিক পক্ষ এবং সরকার যদি ন্যূনতম মজুরি লাগু না করে তা হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথ বেছে নিতে বাধ্য হবেন বলে জানান নেতৃবৃন্দ।