21.1 C
New York
Saturday, June 28, 2025

Buy now

spot_img

বাংলায় ঢুকে তাণ্ডব বিহার পুলিশের, অভিযোগ বিজেপি সাংসদের।

উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ২১ শে মে ২০২২ : শনিবার : বাংলায় ঢুকে তাণ্ডব চালাল বিহারের পুলিশ, বাংলার পুলিশকে না জানিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল কুড়িটি বাড়ি, রাস্তার পিছনে শাসকদলের নেতাদের জমি থাকার কারনে টাকা দিয়ে বিহার পুলিশ ভাড়া করে নিয়ে এসে ভাঙচুর চালিয়েছে শাসকদল, কটাক্ষের সুর বিজেপি সাংসদের গলায়। অন্যদিকে বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব, শুরু তৃণমূল-বিজেপির রাজনৈতিক চাপানউতোর।

বাংলার পুলিশ প্রশাসনকে না জানিয়ে গতকাল সন্ধে বেলা বিহারের পুলিশ পরিচয় দিয়ে একদল লোক মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর বিহার সীমান্তবর্তী সাদলিচক গ্রাম-পঞ্চায়েতের সহরাবহরা এলাকায় ঢুকে রাস্তার ধারে বসবাস করা দরিদ্র কুড়িটি পরিবারের বাড়িঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল। ব্যাপক মারধর করলো ওই বাড়িগুলির পরিবারের সদস্যদের। অভিযোগ বিহারের পুলিশের মার মুখে রক্ষা পায়নি আবাল বৃদ্ধ-বনিতা। অভিযোগের তীর এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের দিকে। রাস্তার ধারের জমি পজিশন ফাঁকা করতেই নাকি বিহারের পুলিশকে আমদানি করা হয়েছিল। ভাঙচুর চালিয়ে আবার বিহারে ফিরে যায় ভিন রাজ্য থেকে আসা পুলিশের দল। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকা-জুড়ে। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে এলাকার এক তৃণমূল নেতা এবং ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধেও। অভিযোগ রাস্তার ধারে সমস্ত জমি তৃণমূল নেতাদের দখলে রয়েছে কিন্তু সেই জমির সামনে প্রায় ৭০ বছর ধরে এই পরিবারগুলি বসবাস করছিল। তাদের সরাতেই এই পরিকল্পনা বলে জানা গেছে। গোটা ঘটনার অভিযোগ জানানো হয়েছে স্থানীয় কুমেদপুর ফাঁড়ি এবং হরিশ্চন্দ্রপুর থানাতে। গোটা ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি সুর চড়িয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। সমস্ত ঘটনার তদন্তে নেমেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার সহরাবহরা মৌজা সাদলীচক গ্রাম-পঞ্চায়েতের অন্তর্গত রাজ্য সড়কের ধারে প্রায় কুড়িটি পরিবার ৭০ বছর ধরে বসবাস করছে। এদের নিজস্ব কোন জমি নেই। তাই বাধ্য হয়ে সরকারি জমিতে রাস্তার ধারে কুড়ে ঘর বানিয়ে জীবন যাপন করছিল। কিন্তু তাদের বাড়িগুলির পিছনে থাকা এলাকার তৃণমূল নেতা গণেশ প্রামানিক মাঝে-মাঝেই হুমকি দিত এদেরকে উঠে যাওয়ার জন্য। কারণ এই বাড়িগুলির পিছনে ছিল গণেশ প্রামাণিকের জমি। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ঝামেলা লেগে রয়েছে। গণেশের বিহারে যাওয়া আসা ছিল। সেই সূত্রেই বেশ কিছু পুলিশকর্মীর সঙ্গে তার আলাপ হয়ে যায়। তাদেরকেই কাজে লাগিয়ে শুক্রবার গভীর রাত্রে ওই দরিদ্র পরিবারগুলির উপর আক্রমণ চালায়। জেসিবি লাগিয়ে মুহুর্তের মধ্যে ভেঙে ফেলা হয় কুঁড়ে ঘরগুলি। অভিযোগ এই সময় ওই পরিবারগুলিকে ব্যাপক লাঠিপেটা করে বিহারের পুলিশ। এমনকি বাচ্চা এবং মহিলাদেরও বাদ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারগুলির অভিযোগ পুলিশের পোশাক পড়ে অনেকেই এসেছিল। সবাই হিন্দিতে কথা বলছিল। এর মধ্যে অনেকেই হাতে বন্দুক ছিল। পাশাপাশি এ ঘটনার পেছনে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সাদলিচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ইন্দ্রজিৎ সরকার পরোক্ষ ভাবে এই কাজে তৃণমূল কর্মী গণেশ প্রামাণিক কে সাহায্য করেছে। যদিও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন প্রধান ইন্দ্রজিৎ সরকার। সাদলিচক গ্রাম-পঞ্চায়েতের প্রধান ইন্দ্রজিৎ সরকারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ওটা বিহার পুলিশের ব্যাপার। এটাতে তার কিছু করার নেই। যদিও তৃণমূলের উর্দ্ধতন জেলা নেতা আবার ক্যামেরার সামনে প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন ওই এলাকা বাংলাতেই পড়ছে। গোটা ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। এদিন সকালে ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যান উত্তর মালদার বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সাহায্যের আশ্বাস দেন। এরপরে বিকেলে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় এসে আইসি সঞ্জয় কুমার গাছের সঙ্গে দীর্ঘক্ষন কথা বলেন। পরে বাইরে এসে তিনি এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব ও বিহার পুলিশের উপর ক্ষোভ উগরে দেন। গোটা ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। চাঞ্চল্য গোটা হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায়। যদিও গনেশ প্রামাণিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোন প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানিয়েছেন ঘটনার বিষয়ে আমাদের কিছু জানা ছিল না। গোটা ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!