উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৪ শে মে ২০২২ : মঙ্গলবার : মালবাজার মহকুমার বাগ্রাকোট এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেরেই চলেছে। গত ২৯ এপ্রিল প্রথম ডেঙ্গি রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল বাগ্রাকোটে। ধীরে ধীরে রোগীর সংখ্যা উদ্বেগ জনক পরিস্থিতিতে পৌঁছাতেই নড়েচড়ে বসেন স্বাস্থ্য দপ্তর ও প্রশাসন।
রাজ্যের জনস্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অসিত বিশ্বাস গত ১৭ মে বাগ্রাকোটে সরেজমিনে ডেঙ্গি পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। একই দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও পূর্ব মেদিনীপুরের এক সভায় বাগ্রাকোটের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরপরই ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েন ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের ৬০ থেকে ৭০ জনের বিশেষ টিম। পালস মোড ক্লিনিং থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করে ডেঙ্গি মশার লার্ভা নষ্ট করতে জোরদার তৎপরতা শুরু করেন তারা। বাগ্রাকোটের টপলাইন ও বিডিআর বস্তীতে পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে রবিবার থেকে ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে পানীয় জলের ট্যাংকার দিয়ে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা শুরু হয়।
সাধারন মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে মাইক যোগে প্রচার এবং নিয়মিত ফগিং করার কাজও চলছে জোরকদমে। চলছে নিয়মিত স্বাস্থ্য শিবির ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার কাজও। এসবের মাঝেই রবিবারও বাগ্রাকোটে এন এস- ১ ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা শতক পেরিয়ে ১০৫ এ পৌঁছে গিয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে বাগ্রাকোটের টপ লাইনের ৪৫ জন, বিডিআর বস্তীর ৪৭ জন, চার্চ লাইনের ৯ জন, মিডল লাইনের ১ জন, বড়গাছ লাইনের ৫ জন এবং শর্মা লাইন, ফ্যাক্টরী লাইন ও বরা লাইনের ১ জন করে রোগী রয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। গত কয়েকদিনে সুস্থ হয়েছেন ৪০ জন। চিকিৎসাধীন ৭০ জনের মধ্যে ওদলাবাড়ি গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি ৯ জন, এবং অন্য হাসপাতালে ২৭ জন রয়েছে। বাড়িতে চিকিৎসা চলছে ৪৩ জনের। ওদলাবাড়ি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন বাগ্রাকোট টপ লাইনের বাসিন্দা অমিত কুমার প্রধান বলেন, প্রথমে আমার বাবা আক্রান্ত হয় কিন্তু বাবা সুস্থ্য বাড়ি ফিরে যায়। এরপর গত শনিবার আমি অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। মঙ্গলবার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তিনি বলেন, বাগ্রাকোট এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০০-র ওপরে।
জলপাইগুড়ি স্বাস্থ্য দপ্তরের এপি ডোমোলোজিষ্ট রাহুল সরকার বলেন, প্রতিদিন বাগ্রাকোট এলাকায় ক্যাম্প করে চিকিৎসা চলছে। রক্তের নমুনা সংগ্রহ চলছে। পাশাপাশি ফগিং এবং স্প্রে হচ্ছে বাগ্রাকোটের বিভিন্ন এলাকায়। আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়ালেও সুস্থ্য হয়েছে ৪০ জনের মত। ইতিমধ্যে যে সব জায়গায় জমা জল রয়েছে সেই সব জায়গা ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ২৩০০ টি মশারি গ্রামে বিতরন করা হয়েছে।