উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৮ শে মে ২০২২ : শনিবার : চা-শ্রমিকদের সুবিধার্থে গত এক বছর আগে চা-বাগানে চা-সুন্দরী প্রকল্পের সুচনা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। চা-সুন্দরী প্রকল্পে কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিন্তু কিছু বিজেপি বিধায়কেরা এই প্রকল্পকে ভাল ভাবে নেই নি, দাবি তৃণমূল এর জলপাইগুড়ি জেলার আই.এন.টি.টি.ইউ.সি.-র সভাপতি রাজেস লাকড়া। তাই শনিবার দুপুরে মাল ব্লকের মানাবাড়ি চাবাগানের চা-সুন্দরী প্রকল্প ঘুরে দেখেন। “চা সুন্দরী” প্রকল্প নিয়ে জন বারলা’ র অভিযোগ নস্যাৎ করলেন রাজেশ লাকড়া। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আই.এন.টি.টি.ইউ.সি.-র জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাপতি রাজেশ লাকড়া শনিবার বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এই প্রকল্পের মাধ্যমে চা-শ্রমিকরা প্রকৃতপক্ষে বাড়ির মালিক হয়ে উঠবেন। তাদের নিজস্ব বাড়ি হবে।
সম্প্রতি বিজেপির তরফে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জন বারলা রাজ্য সরকারের চা-সুন্দরী প্রকল্পের সমালোচনা করে প্রকল্পটি আগামীদিনে চা-শ্রমিকদের জন্য ঘাতক হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছিলেন। প্রকল্পটি চা-শ্রমিকদের চিরাচরিত জীবনশৈলীর বিপরীত বলে অভিযোগ করেছিলেন জন বারলা। মানাবাড়ি চা-বাগানে চা-সুন্দরী প্রকল্পের নির্মীয়মান ঘরগুলো পরিদর্শন শেষে আই.এন.টি.টি.ইউ.সি.-র জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাপতি রাজেশ লাকড়া বলেন, এক এক জন চা-শ্রমিক শ্রমিক মহল্লার ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। বাগানের কাজ থেকে অবসর নিলে তাকে ঘর ছেড়ে দিতে হতো। বাস্তবে, মাথা গোঁজার ঠাঁই রক্ষা করতে অবসরপ্রাপ্ত চা শ্রমিক পরিবারের শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের অনেকেই এখন বাধ্য হয়ে চা-বাগানে পাতা তোলার কাজ সহ অন্য কাজ করছে। রাজেশ বাবু বলেন, মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে গিয়ে শ্রমিক পরিবারের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ যাতে কোনো ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই জন্যই চা-সুন্দরী প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের জন্য নিজস্ব বাড়ি তৈরি করছে মমতা ব্যানার্জি। অবসরের পরেও এই বাড়িতে থেকে শ্রমিক পরিবারের ছেলে-মেয়েরা চা শিল্পের বাইরে অন্য কাজে যোগ দিতে পারবেন।
রাজেস লাকড়া বলেন, আসলে বিজেপি রাজনীতি করতে চাইছে চা-বাগান এলাকায়। কারন চা-বাগানের শ্রমিকেরা বিজেপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর রাজ্য সরকারের চা-সুন্দরী প্রকল্পের বাস্তবায়ন আগামীদিনে চা বলয়ে বিজেপির পায়ের তলায় যতটুকু মাটি অবশিষ্ট আছে সেটাও কেড়ে নেবে। এই কারনেই যেনতেনো প্রকারে ষড়যন্ত্র করে যুগান্তকারী এই প্রকল্পটিকে বাঁধা দিতে ডুয়ার্স থেকে নির্বাচিত বিজেপির একাধিক বিধায়ক ও সাংসদ সরব হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এক একটি বাড়ি তৈরিতে আনুমানিক ৫ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা রাজ্য সরকারের তরফে খরচ করা হচ্ছে। মানাবাড়ি, ঢেকলাপাড়া সহ ডুয়ার্সের আরও বেশ কয়েকটি চা বাগানে এই চা সুন্দরী প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে জোরকদমে এগিয়ে চলেছে। মানাবাড়ি চা-বাগানে চা সুন্দরী প্রকল্পের ঘর পেয়েছে শ্রমিক আশিক প্রজা, সুধা ওড়াও। তারা বলেন, এই প্রথম আমরা নিজেদের বাড়ি পাচ্ছি। এরজন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যেই ঘরগুলো আমাদের হস্তান্তর করা হবে বলে শুনেছি।