উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২ রা জুন ২০২২ : বৃহস্পতিবার : গত বুধবার বিকেলের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে আবার মাল ব্লকের বাগ্রাকোট ডেঙ্গু প্রবন এলাকা পরিদর্শন এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের স্তরে বৈঠক করলেন ডিরেক্টর (ম্যালেরিয়া) এবং স্টেট প্রোগ্রাম অফিসার ফর ভেক্টর বর্ণ ডিজিসেজ ডাঃ তুষার আচার্য। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে বাগ্রাকোটে ডেঙ্গি পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে বলে দাবি স্বাস্থ্য কর্তাদের। স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী সংগৃহীত মোট রক্তের নমুনা পরীক্ষার পর গত একমাসে বাগ্রাকোটে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৯ সালের রেকর্ড ভেঙে ২৩১ এ পৌঁছে গিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৩৬ জন। বাড়িতে রেখে চিকিৎসা চলছে ৮৬ জনের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ জন।
২০১৯ এরপর, বাগ্রাকোটে ফের একবার ডেঙ্গি মাথাচাড়া দিয়ে ভয়াবহ আকার ধারন করায় রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা যে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন তা স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের বারবার এই এলাকা পরিদর্শনে আসাতেই একপ্রকার স্পষ্ট। গত ১৭ মে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধিকর্তা ডাঃ অসিত বিশ্বাসের পর বাগ্রাকোটে এসেছেন ডেপুটি ডিরেক্টর (ম্যালেরিয়া) এবং স্টেট প্রোগ্রাম অফিসার ফর ভেক্টর বর্ণ ডিজিসেজ ডাঃ তুষার আচার্য। জেলা স্তরের পতঙ্গবিদ রাহুল সরকারের পাশাপাশি এদিনই আবার নতুন করে রাজ্য পতঙ্গবিদ ডাঃ কৌশিক সান্যাল বাগ্রাকোটের বিভিন্ন এলাকা চষে এডিস মশার লার্ভার খোঁজ চালিয়েছেন। বেশ কিছু বাড়িতে ড্রামে জমিয়ে রাখা জলে এডিস মশার লার্ভা দেখতে পেয়ে ড্রামগুলো উল্টে খালি করে দিতে দেখা গিয়েছে দুই পতঙ্গবিদ রাহুল সরকার ও ডাঃকৌশিক সান্যালকে। কলকাতা স্বাস্থ্য ভবন থেকে আসা ম্যালেরিয়ার ডাইরেক্টর তুষার ভট্টাচার্য, জেলার স্বাস্থ্য টিম ও পঞ্চায়েত কর্মিদের সাথে ডেঙ্গু প্রভাবিত বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে সাংবাদিকদের বলেন, ডেঙ্গু অনেকটা মোকাবিলা করা গেছে। যাতে অন্য জায়গায় না ছড়ায় তার জন্য ম্যালেরিয়ার ডাইরেক্টর তুষার ভট্টাচার্য জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে জেলার সীমান্তে অর্থাৎ কালিম্পং সীমান্তে একটা টিম পাঠিয়ে নজরদারী ও সার্ভে করে ঠিকমত সেবা প্রদান করার ব্যবস্থা করতে বলেছেন। তিনি বলেন, অনুরুপ ভাবে কালিম্পং জেলার মুখ্য স্বাস্থ আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে দুই জেলা কো অর্ডিনেট করে কাজ করে। যাতে সীমান্ত পেরিয়ে এই ডেঙ্গু জেঁকে না বসে। যে ভাবে স্বাস্থ্য দপ্তর কাজ করছে তাতে এই ডেঙ্গু প্রতিরোধ দ্রুত হবে। এদিন বাগ্রাকোট এবং বাগ্রাকোটের সীমান্তবর্তী কালিম্পং জেলার কয়লা কোম্পানী এলাকায় ঘুরে দেখেন আধিকারিকেরা।
এদিকে বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান সরিতা শাহী বলেন স্বাস্থ্য ভবনের টিমের সাথে সব এলাকা ঘুরেছি। তারা বলেছেন, আরও বেশী সক্রিয় হয়ে কাজ চালাতে। ফগিং, স্প্রের কাজ চালানো ও বাড়িতে জমা জল ফেলে দিতে। উপপ্রধান অভিযোগ করেছেন যে চার বছর আগে টপ লাইনে পি.এইচ.ই. কে ৪০০ পরিবারের জন্য জলের লাইনের বসানোর দাবী করা হয়েছিল। জনস্বাস্থ্য কারিগরীর দপ্তর থেকে সার্ভে করা হয়। জানা গিয়েছিলো দ্রুত টেন্ডার ডেকে কাজ হবে। কোথায় কাজ হল? চার বছর হয়ে গেল। সেটারও কোন খবর নেই। এই জলের ব্যবস্থা হলে পানীয় জল, জমা রাখার প্রশ্নটা আসতো না। আর ডেঙ্গুর প্রকোপও দেখা যেত না বাগ্রাকোটে। এলাকার মানুষ জলের কষ্টের জন্য জল জমা রাখেন। এ ব্যাপারটা প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দপ্তরকে দেখতে হবে।