উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৬ ই জুন ২০২২ : সোমবার : হাসপাতাল চত্বরে বাটাম দিয়ে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ স্বামীর। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা। স্ত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। লোনের কিস্তির টাকা দেওয়া নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। সেই সঙ্গে স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ।
ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুরে। সুনীল মুসহর এবং লালি মুসহর স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই থাকেন হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের কোয়ার্টারে। স্বামী দীর্ঘদিন ধরে ওই হাসপাতালেই জেনারেটর চালানোর এবং জল সরবরাহের কাজ করেন। অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে সুনীল অত্যাচার চালাত স্ত্রীর উপর। বেসরকারি ব্যাংক থেকে লোন বাবদ ১ লক্ষ টাকা নেয়। সেই লোনের কিস্তি শোধ করার জন্য সুনীল চাপ দিতে থাকে তার স্ত্রীকে। যেখান থেকে হয় বিবাদের সূত্রপাত। সেই সময় তাকে মারধর করা হতো বলে অভিযোগ। ফলে স্ত্রী দুই মাস ধরে বাবার বাড়ি চলে যায়। সুনীলের অভিযোগ সেই সময় সে তার স্ত্রীকে ফোন করলে ফোনে পেতো না। এদিকে টাকার জন্য গয়না বন্ধক দিয়েছিল। সেই বন্ধকের টাকা দেওয়া নিয়েও মহাজনের সঙ্গে ফোনের কথোপকথনের জন্য সুনীল তাকে সন্দেহ করে। এই সব ঝামেলা নিয়ে এর আগেও একবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। যদিও সেই সময় স্ত্রী নিজেই স্বামীকে ছাড়িয়ে আনেন। এদিকে সোমবার বাপের বাড়ি থেকে পুকুরে গেছিলো স্ত্রী। সেখানে একা পেয়ে সুনীল তাকে মারধর করে। তারপর হাসপাতাল চত্বরেও বাটাম দিয়ে মারে। ওই অবস্থাতেই স্ত্রীর বাড়ির লোকজন তাকে নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় যায় অভিযোগ দায়ের করে। জানা যায় এই সব ঘটনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনেকেই জানতো। যদিও এই নিয়ে সে রকম ভাবে কেউ মাথা ঘামায় নি।
আক্রান্ত অভিযোগকারী গৃহবধূ লালি মুশহর বলেন, আমার স্বামী আমাকে বাটাম দিয়ে মারধর করে হাসপাতাল চত্বরে। দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার চালাত আমার উপর। অকারণে সন্দেহ করতো। আমি এর বিচার চাই। এই ধরনের অত্যাচার করলে আমি ওর সঙ্গে থাকতে চাই না। আক্রান্ত গৃহবধূ লালির কাকু অসীম দাস বলেন, আমাদের মেয়ের উপর অত্যাচার চলত বলে আমরা তাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। অকারনে ওর স্বামী ওকে সন্দেহ করতো। লোনের কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিত। ফোন করে উত্ত্যক্ত করতো এবং গালিগালাজ করতো। আমরা এবার এর বিচার চাই। অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্মচারী সুনীল মুশহর কার্যত অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। যদিও তাঁর মতে সে তার স্ত্রীকে ফোন করতেই পারে। কিন্তু স্ত্রী মায়ের অজুহাত দিয়ে তার ফোন ধরত না অন্যদিকে ফোনে ব্যস্ত থাকত। তাই সে মাথা ঠিক রাখতে পারেনি। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানান, অভিযোগ জমা পড়েছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।