উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ৯ ই জুন ২০২২ : বৃহস্পতিবার : প্রায় দেড় বছর আগে পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে শয্যাশায়ী ময়নাগুড়ির যুবক বিপুল বর্মন (২০)। তার চিকিৎসার খরচ চালাতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়েছে তার পরিবার। অর্থের অভাবে বর্তমান বিপুলের চিকিৎসা প্রায় বন্ধের মুখে। যার ফলে ছেলের চিকিৎসা নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় রয়েছে বিপুলের পরিবার। এই পরিস্থিতিতে ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন তার পরিবার। বিপুলের মা বিমলা বর্মন বলেন, দেড় বছর ধরে ছেলের চিকিৎসা চালাতে গিয়ে পথে বসার অবস্থা। এখন আর কিছু বাকি নেই যা বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করাবো। এখনও প্রতি মাসে ছেলের চেকআপ ও ঔষধ বাবদ প্রায় দশ হাজার টাকা খরচ। দিন মজুর করে সংসার চলে। কি করে ছেলের চিকিৎসা চালাবো বুঝতে পারছি না। সরকারি ভাবে বা কোন সংস্থার পক্ষ থেকে যদি ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় তা হলে খুবই উপকৃত হব।
পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। তাই উচ্চমাধ্যমিক পাশের পর আর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি বিপুলের। উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পরেই সংসারের হাল ধরতে গাড়ির চালক হিসাবে কাজ শুরু করে সে। কিন্তু সে মোটেই বুঝতে পারেনি গাড়ির চালকের কাজে শুরুতেই তাকে পঙ্গু হয়ে পড়ে থাকতে হবে। প্রায় দেড় বছর আগে পিকআপ ভ্যানে করে ভাড়া মারতে গিয়ে ফালাকাটায় এক পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয় বিপুল। তার বাঁ-পায়ের হাঁটুর নীচের অংশ ক্ষত বিক্ষত হয়। দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ দেড় বছরে শিলিগুড়ি, কলকাতা এবং বিহারের পাটনায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে তার। মোট তিন বার অপারেশন হয়েছে তার পায়ের। ব্যক্তিগত সম্পত্তির পাশাপাশি কিছু সহৃদয় ব্যক্তি ও সংস্থার সহযোগিতায় খরচ হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। সেই টাকা খরচ করেও সময় মতো টাকা জোগাড় করে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করতে না পারায় কাজের কাজ কিছু হয়নি। বরং বর্তমান বিপুলের বাঁ পায়ের হাঁটুর নীচের হাড় কেটে বাদ দিতে হয়েছে। এখন বিহারের পাটনায় এক বেসরকারি নার্সিং হোমের অধীনে বিপুলের চিকিৎসা চলছে। মাস তিনেক আগে সেখানে তার পায়ের অপারেশন করে হাড় বাদ দিতে হয়েছে। চিকিৎসকরা প্রতিমাসে চেকআপের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে বিপুলের পরিবার প্রতিমাসে চেকআপ করে চিকিৎসার খরচ টুকুও আর চালাতে অক্ষম। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসার অভাবে বিপুলের সেরে ওঠা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এখন এমনই পরিস্থিতি যে চিকিৎসক হুইলচেয়ার বা ওয়াকিং স্টিক ব্যবহারের পরামর্শ দিলেও দীর্ঘ দেড় বছরে বিপুলের পরিবারের পক্ষে তা কেনা সম্ভব হয়নি। যার দরুণ দীর্ঘ সময় ধরে এক বিছানায় শয্যাশায়ী রয়েছে বিপুল। ফলে হুইল চেয়ার বা ওয়াকিং স্টিক এর পাশাপাশি ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন দলের পরিবার। বিপুলের বাবা গোপাল বর্মন বলেন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেও সেই কার্ড দিয়ে কোথাও চিকিৎসা পাইনি। ছেলের চিকিৎসা চালাতে ভিটে পর্যন্ত গেছে। এখন আর কোনো উপায় নেই। সহযোগিতা না পেলে ছেলেকে বাঁচাতে পারব কিনা বুঝতে পারছি না।