29 C
New York
Thursday, June 26, 2025

Buy now

spot_img

মায়ের সাথে ডালি, ঝুড়ি বেঁধে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল জিতুর, খুশি গ্রামের মানুষ।

উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ১২ ই জুন ২০২২ : রবিবার : বাবা পেশায় ভিন রাজ্যের শ্রমিক, মা করে দিনমজুরি। বেতের ডালি, ঝুড়ি তৈরি করে উচ্চ মাধ্যমিকে নজর কারা ফল করলো। কলা বিভাগে ৪৬০ নম্বর পেয়ে স্কুলের সেরা মালদহের চাঁচলের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুর গ্রামের জিতু চৌধুরী। অভাবী মেধাবী ছাত্রীর উচ্চ শিক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে অর্থ, দুশ্চিন্তায় মেধাবী পড়ুয়ার পরিবার।

প্রতিভাকে কখনও চেপে রাখা যায় না। তা আরও একবার প্রমাণ করে দিয়েছে চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুরের জিতু চৌধুরি। মাসে ১৫ দিন কার্যত আত পেটে খেয়ে দিন কাটে। বাবা পরিযায়ী শ্রমিক। মা দিনমজুরি করে, বাড়িতে বাঁশের ডালি তৈরি করে দিন গুজরান করেন। আট ফুট বাই দশ ফুটের ঘরটায় গাদাগাদি করে থাকতে হয় পাঁচজনকে। বাবা-মা’র সঙ্গে জিতুরা তিন ভাইবোন সেখানে মাথা গোঁজে। পেট চালাতে জিতুকেও মায়ের সঙ্গে ডালি-ঝুড়ি তৈরি করতে হয়। সারাদিন বাড়ির কাজে ব্যস্ত থাকার পরেও এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৬২ নম্বর পেয়েছে জিতু। বড় হয়ে ভূগোলে গবেষণা নিয়ে করতে চায়। কিন্তু ইচ্ছেপূরণ হবে কিনা তা নিয়ে তার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ, সংসারে অভাব। দারিয়াপুর হাইস্কুল থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল জিতু। বাড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে স্কুল। বেশিরভাগ দিনই খালিপেটে সাইকেল চালিয়ে স্কুল যেতে হত। তারপরেও উচ্চমাধ্যমিকে এমন ফল করায় শুধু বাবা-মা নয়, গ্রামবাসীরাও খুব খুশি।

মেধাবী পড়ুয়া জিতু জানায়, “খুব অভাবে পড়াশোনা করেছি। টাকা না থাকায় একজন মাত্র গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তাম। বাবা দিনমজুরি করেন, অনেক সময় ভিনরাজ্যেও কাজে যান। মা দিনমজুরি করে, বাড়িতে বাঁশের ডালি-ঝুড়ি তৈরি করে ভাত জোগাড় করেন। আমি ভূগোল নিয়ে গবেষণা করতে চাই। উচ্চমাধ্যমিকে আমি ৪৬২ নম্বর পেয়েছি, আমি পড়তে চাই। কিন্তু টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারব কিনা জানি না। নিজের পড়াশুনার খরচ তুলতে ও সংসারে মা কে সাহায্য করতে হাতে খাতা-কলমের পাশাপাশি তুলে নিয়েছিল বাসের বেত। সেই বেত দিয়ে মা এর সাথে তৈরি করতে শিখে ডালি, ঝুড়ি আর তা বিক্রি করে সংসারে চলে ভাতের যোগান। এবার স্কুলের গণ্ডি ছেড়ে পা দেবে কলেজের গণ্ডিতে কারণ তার ইচ্ছে রয়েছে ভূগোল নিয়ে গবেষণা করার। কিন্তু সেই ইচ্ছে কি পূরণ হবে। মেয়ের উচ্চশিক্ষার খরচ কিভাবে বহন করবে সেই চিন্তায় এখন আকুল হয়ে উঠেছেন যে তোর মা ও বাবা।

জিতুর মা সীমা চৌধুরি মেয়ের সাফল্য উপভোগ করতে পারছেন না। তবু মেয়ের সাফল্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাঁর চোখে গর্বের অশ্রু। বললেন, “ভেবেছিলাম, এভাবে পড়াশোনা করে মেয়ে খুব ভালো ফল করতে পারবে না। কিন্তু ও করে দেখিয়েছে। খুব ভালো লাগছে। ভয়ও হচ্ছে। এরপর ওকে কীভাবে পড়াবো? গ্রামের মেয়ে এত ভালো ফলাফল করেছে তাতে খুশি প্রতিবেশীরা। চন্ডিপুর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ জিন্না বলেন, আমরা গর্বিত আমাদের জিতু এত ভাল ফলাফল করেছে। আমরা ওই গরিব মেয়েটার পাশে সব সময় আছি।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!