উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ১৭ ই জুলাই ২০২২ : রবিবার : মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে দিন দিন বেড়ে চলেছে ড্রাগ আসক্তদের সংখ্যা। আর এই ড্রাগ আসক্তদের জন্য এলাকায় বাড়ছে চুরি ছিনতাই এই ধরনের অপরাধ।
শনিবার গভীর রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার বাজার পাড়ায় এক ড্রাগ আসক্ত যুবককে চোরাই মাল কেনা-বেচা করতে হাতে-নাতে ধরে ফেলে এলাকার বাসিন্দারা। ধৃত যুবকের নাম গোবিন্দ রজক (২৩)। এর আগেও ওই যুবকের বিরুদ্ধে ড্রাগ নেওয়ার অভিযোগ ছিল। এদিন সন্ধ্যা বেলায় বাজার পাড়া সংলগ্ন নবনির্মিত আই.টি.আই. কলেজের এক অংশে এই যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এলাকাবাসীরা ওই যুবককে পাকড়াও করে জিজ্ঞাসা করা শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে ওই যুবক এলাকারই আরেক যুবকের কাছ থেকে চোরাই মাল কিনতে এসেছিল। তারপরেই এলাকার বাসিন্দারা ওই ড্রাগ আসক্ত যুবককে ধরে বেধড়ক মারধর চালায়। খবর দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। অবশেষে ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীর কাছ থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার বিভিন্ন পাড়ায় যুব সমাজ ড্রাগের নেশা ক্রমে বেড়ে চলেছে। ড্রাগের নেশায় আসক্ত হয়ে এলাকার একাধিক যুবক ইতিমধ্যে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছে এমনও ঘটনার সামনে এসেছে। ড্রাগের পয়সা জোগাড় করতে গিয়ে এলাকায় বেড়েছে চুরি ছিনতাই। হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় একের পর এক অপরাধ বেড়ে চলেছে। আর এর পিছনে যে ড্রাগ আসক্ত যুবকেরা রয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এলাকার ছাত্র ও যুব সমাজকে ড্রাগের কারবারিরা নষ্ট করে দিচ্ছে, কিন্তু পুলিশ প্রশাসন নির্বিকার। এই ড্রাগ চক্রের আসল মাস্টারমাইনকে গ্রেপ্তার না করে উল্টে ড্রাগ আসক্ত কিছু যুবকদের গ্রেফতার করছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। কিন্তু এতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। এলাকায় দিনের দিন ড্রাগ আসক্তদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
অন্যদিকে ওই ধৃত যুবক গোবিন্দ রজক জানিয়েছে, আমি ড্রাগ আগে নিতাম কিন্তু এখন আর ওই কাজে যুক্ত নই। এদিন এলাকারই আরেক যুবক আমাকে ডেকেছিল একটি চোরাই মাল কেনার জন্য। কিন্তু কাগজপত্র না থাকায় আমি ওই মাল নেই নি। তবে আমি এখন কোনো রকম ড্রাগ নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত নই। স্থানীয় বাসিন্দা দেবব্রত পাল জানান, হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় দিনের দিন ড্রাগ আসক্তদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই সর্বনাশার ড্রাগের কারণে আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি। এলাকার অনেক পরিবার ড্রাগের নেশার কারণে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এলাকার পুলিশ প্রশাসন আসল মাস্টারমাইনকে না ধরে কিছু চুনোপুটিকে ধরছে। এভাবে এলাকা ড্রাগমুক্ত হবে না। বাজারপাড়া এলাকার আরেক বাসিন্দা সৌরভ দাস জানান, হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা জুড়ে ছাত্র যুব সমাজদের মধ্যে ক্রমেই ড্রাগের নেশা বেড়ে চলেছে। দিনের আলোয় সরাসরি ড্রাগ কেনা-বেচা চলছে। আমরা বহুবার এলাকায় ড্রাগ নিতে স্থানীয় যুবকদের হাতেনাতে ধরেছি, আজও এক যুবককে ধরা হয়েছে। আমরা ওকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। আমরা চাই পুলিশ প্রশাসন আরো শক্ত হোক। এই প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এলাকার ড্রাগস্ কারবারীদের উপর আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।