উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ১০ ই আগষ্ট ২০২২ : বুধবার : আন্তরাজ্য অপহরণ চক্রের তিন পান্ডাকে গ্রেপ্তার করলো মালদা পুলিশ। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে অপহৃত হয়ে থাকা এক কাপড় ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে কালিয়াচক থানার পুলিশ। এই ঘটনায় তিন কুখ্যাত অপহরণকারীর কাছ থেকে পুলিশ বেশ কিছু তথ্য জানতে পেয়েছে। ধৃতেরা দীর্ঘদিন ধরেই অপহরণ চক্রের কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বিভিন্ন জেলায় তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তারও করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এই কাজে বিভিন্ন এলাকার কিছু যুবকদের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল ধৃত অপহরণকারীরা। তাদের মাধ্যমেই এলাকায় পুঁজিপতিদের খোঁজখবর নিয়েই অপহরণ করার মাস্টার প্ল্যান কষতো ধৃতেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মাসুদ আলম, আজিজ শেখ, দুলাল শেখ। এদের বাড়ি মুর্শিদাবাদের ওমরপুরে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কালিয়াচক থানার ফতেখানি এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ রহিম বিশ্বাস এলাকার একজন প্রভাবশালী কাপড় ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত। তার দোকান রয়েছে কালিয়াচকের জালালপুর স্ট্যান্ডে। গত ২৯ জুন রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় জাতীয় সড়ক থেকেই ওই কাপড় ব্যবসায়ীকে গাড়ি করে তুলে নিয়ে যায় ছয় জনের সশস্ত্র দুষ্কৃতির দল। এরপর ওই ব্যবসায়ী পরিবারকে ৬০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ হিসাবে দাবি করা হয়। কিন্তু থেমে থাকেনি পুলিশ। ওই ব্যবসায়ীর অপহরণের ঘটনার অভিযোগ পেতেই মোবাইলের সূত্র ধরে শুরু হয় তদন্ত। মাত্র দশ ঘণ্টার ব্যবধানে মুর্শিদাবাদে সুতি এলাকার টোলপ্লাজা এলাকায় একটি চার চাকার গাড়ির ধাওয়া করে অপহরণকারীদের ধরে ফেলে কালিয়াচক থানার পুলিশ। সেই সময় গাড়িতে থাকা ছয় জন দুষ্কৃতির মধ্যে তিন জন পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। আর বাকি তিন জনকে ধরে ফেলে পুলিশ। সেই সময় উদ্ধার হয় ওই কাপড় ব্যবসায়ী। তাকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে অপহরণকারীরা ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর ওই ব্যবসায়ীর পরিবার পুলিশের এই কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছে।
ব্যবসায়ী মহম্মদ রহিম বিশ্বাস বলেন, যারা আমাকে অপহরণ করেছিল তাদের কয়েকজনকে আমি চিনতে পারি নি। ধৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার পুলিশ সুপারের কাছে নতুন করে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। কালিয়াচক থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত তিন অপহরণকারীর নাম মাসুদ আলম, আজিজ শেখ, দুলাল শেখ। এদের বাড়ি ওমরপুর এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে এরা অপহরণচক্রের বড় একটি রেকেটের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। বিভিন্ন এলাকায় এরা দলও সংগঠিত করেছে। অপহরণ কারবারের ধৃতেদের সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের অপরাধ জগতের যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। পুলিশি জেরার মুখে ধৃতেরা বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে, যা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।