28.6 C
New York
Saturday, June 21, 2025

Buy now

spot_img

ছয় বছরের অভির চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত পরিবার।

উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ০৫ ই আগষ্ট ২০২২ : শুক্রবার : আম গাছ থেকে পড়ে কিডনি রোগে মৃত্যু পথযাত্রী মুশহর পরিবারের শিশু, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেও মিলছে না পরিষেবা, দেখা মেলেনি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তাদের, বিডিওকে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ মহকুমা শাসকের, তৃণমূলকে খোঁচা বিজেপির, পাল্টা সব রকম ভাবে পাশে থাকার আশ্বাস তৃণমূল নেতৃত্বের।

যেখানে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা নয় ছয়ের অভিযোগ। এমনকি যখন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একের পর এক বিলাসবহুল জীবনের গল্প সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসছে। সেখানেই মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার এক মুশহর পরিবারের শিশু বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেও সেই কার্ড থেকে চিকিৎসার সুবিধা মেলেনি। আম গাছ থেকে পড়ে গিয়ে দুমাস আগে পেটে চোট লেগেছিল। তারপর থেকে অসুস্থ হতে শুরু করে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পাড়া এলাকার বাসিন্দা ছয় বছরের অভি ঋষি। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে জানা যায় ডান দিকের কিডনি অকেজো হয়ে গিয়েছে। দরিদ্র মুশহর পরিবারের মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। বাড়ির শিশুর চিকিৎসার জন্য সর্বস্য খুইয়ে ফেলেছে এই মুশহর পরিবারটি। আবাস যোজনার ঘর করার টাকা মিলেছিল কিন্তু সেটিও ঘর না করে শিশুর চিকিৎসার পিছনে খরচা হয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছে পরিবার। মুশহর সম্প্রদায়ের মানুষ হলেও এরা এখনো পর্যন্ত বিপিএল কার্ড তো দূরের কথা মুশহর হওয়ার সার্টিফিকেট পর্যন্ত পাননি। সরকারের প্রচুর সুবিধা থেকে বঞ্চিত এখনো পর্যন্ত। অভির বাবা হিন্দোল ঋষি পরিযায়ী শ্রমিক। ভিন রাজ্যে কাজ করে যেটুকু টাকা জমিয়ে ছিলেন তাও ছেলের পেছনে খরচা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু একদিকের কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ায় ছেলে ক্রমশই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। শরীরে জমা হচ্ছে জল। এদিকে চিকিৎসার জন্য যোগাড় হচ্ছে না অর্থ। তাই বাধ্য হয়ে পরিবারের ছোট সদস্য অভির মৃত্যুর জন্য দিন গুনছে পরিবার। অভির মা নমিতা ঋষি এবং ঠাকুমা সীমা ঋষি দুজনে লোকের বাড়ি বাড়ি পরিচালিকার কাজ করে কোন রকমে সংসার চালান। অভির অসুখ ধরা পড়ার পর থেকেই সব টাকাই তার চিকিৎসার পিছনে খরচা হয়ে যাচ্ছে তাই বাধ্য হয়ে শাক পাতা খেয়ে দিন চালাতে হচ্ছে। তাদের সমস্যা সমাধানে এলাকার প্রশাসনিক কোনো আধিকারিককে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। শুনেছেন এলাকার বিধায়ক মন্ত্রী হয়েছেন। পরিবারটি দিন গুনছে যদি মন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়ে অভিকে বাঁচানো যায়। এদিকে এই ঘটনা নিয়েই শুরু হয়েছে তৃণমূল বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক চাপানোতোর। তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ সানিয়েছে বিজেপি। জেলা বিজেপি সাংগঠনিক সম্পাদক রূপেশ আগারওয়ালের মত এক দিকে সম্পূর্ণ দুর্নীতি চলছে রাজ্য-জুড়ে। মন্ত্রীর বান্ধবীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকার পাহাড় উদ্ধার হচ্ছে। অন্যদিকে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর দিকে ঢলে যাচ্ছে একটি শিশু। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও মিলছে না চিকিৎসার সুবিধা। এটা সম্পূর্ণ সরকার এবং প্রশাসনের ব্যর্থতা। যদিও তৃণমূল নেত্রী তথা হরিশ্চন্দ্রপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা সুজাতা সাহা‌ বলেন সব রকম ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস এই পরিবারের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। বিপিএলের তালিকায় এবং সার্টিফিকেট কেন পায়নি সেটা দেখা হবে। তারা যেন খুব তাড়াতাড়ি পেয়ে যায় সেই ব্যবস্থাটাও করা হবে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে কেন চিকিৎসা মেলেনি সেটা প্রশাসনকে বলবো দেখতে। চাঁচল মহকুমা শাসক কল্লোল রায় জানান বিষয়টি এখন শুনলাম। বিডিও সাহেবকে বলবো খোঁজ নিয়ে তড়িঘড়ি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। প্রশাসন সব রকম ভাবে পরিবারের পাশে থাকবে। কিছুদিন আগেই মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তাজমুল হোসেন। এখন দেখার বিষয় দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী এই নিয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন কি না? ছয় বছরের সেই ছোট্ট শিশুটি কী পাবে চিকিৎসা? যদি চিকিৎসার অভাবে সেই শিশুকে মারা যেতে হয় তবে তা সমাজের লজ্জা। তাহলে সরকার এবং প্রশাসনের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা। মানুষকে মৌলিক পরিষেবা দিতে তারা ব্যর্থ।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!