উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ১ লা নভেম্বর ২০২২ : মঙ্গলবার : বৃদ্ধ স্বামী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। দিনেদিনে বাড়ছিল বিদ্যৎবিলের দেনা। দিনমজুরী করে কি ভাবে বিল পরিশোধ করবে, সেই চিন্তাই ঘুম উড়েছিল স্ত্রীর। টাকার অভাবে কয়েকবছর ধরে বিল দিতে সক্ষম হননি। অবশেষে অসহায় বৃদ্ধ দম্পতির পাশে দাঁড়ালো রাজ্য সরকার। দুয়ারে সরকার শিবিরে এসে বিদ্যুৎ বিলের উপর মোটা অংকের আংশিক ছাড় পেয়ে তা পরিশোধ করলেন বৃদ্ধ দম্পতি। সরকারের মানবিক ভূমিকায় স্বস্তির হাসি হাসলেন মালদহের চাঁচল-১ ব্লকের কলিগ্রামের পঞ্চায়েতের বগচড়ার বাসিন্দা ভাকোল মহালদার।
মঙ্গলবার কলিগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গার্লস স্কুলে দুয়ারে সরকার শিবির বসে। সেখানে লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার, মৎসজীবিদের নিবন্ধীকরণ সহ রাজ্য সরকারের মোট ২৭ টি জনমুখী প্রকল্পের শিবির বসে। তার মধ্যে এবার আংশিক বিদ্যুৎ বকেয়া মুকুব ও নতুন কানেকশনের জন্য শিবির করা হয়েছে এবার। আর সেই শিবির উপচে পড়া ভিড় জমছে। এলাকার বহু কৃষিজীবী ও দিনমজুর শ্রেনীর মানুষ সেখানে আংশিক বিদ্যুৎ বকেয়া মকুবের আশায় ভিড় জমিয়েছেন। কলিগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক দিনমজুর তথাপক্ষাঘাত গ্রস্ত স্বামীকে নিয়ে শিবিরে আসেন।
ক্যাম্পের বাইরে থেকে লাঠি ধরে প্রশাসনিক কর্তারা নিয়ে আসে। তাদের বিদ্যৎ বিলের নথি দেখে বিল পরিশোধ প্রক্রিয়া নিজে হাতেই করেন মহকুমাশাসক ও বিডিও। তাদের দুই বছরের জমে থাকা প্রায় ৬ হাজার টাকা বিলে আংশিক মকুব হিসেবে ১০৯৮ টাকা জমা নেওয়া হয়েছে। জলের মতো সস্তায় বিল মকুব হতেই মুখে চওড়া হাসি অসহায় বৃদ্ধ দম্পতির। বিল পরিশোধ করে ভাকোল মহালদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্বামী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী। দিমজুরী করে কোনো রকমে সংসার চলে।প্রায় দশবছর ধরে বিল দেওয়া হয়নি আর্থিক কারনে। সরকার বিদ্যুৎ আংশিক বিল মকুব করছেন। এই কথা শুনেই পরিশোধ করতে আসি। আমাদের অসহায়দের ওপর নজর দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার ধন্যবাদ জানাই। এদিন কলিগ্রামে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে পরিদর্শনে যান চাঁচলের এসডিও কল্লোল রায়, চাঁচল-১ ব্লকের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য্য, চাঁচল থানার আই.সি পুর্ণেন্দু কুমার কুণ্ডু। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পটি পরিচালনা করেন কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রেজাউল খাঁন। এদিন পুলিশের তরফে বিশেষ ভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হয় দুয়ারে সরকার শিবিরের বাইরে ও ভেতরে। প্রকল্প আবেদনে কেউ যেন আর্থিক প্রতারণার শিকার না হন,সে দিকেও নজর ছিল পুলিশ ও প্রশাসনের।