উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৩ রা নভেম্বর ২০২২ : বৃহস্পতিবার : সিডিউল মেনে হচ্ছে না কাজ, হাইড্রেনের কাজ শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দিল এলাকাবাসী, বিক্ষোভে সামিল তৃণমূল কর্মী সমর্থকরাও, খোঁচা বিজেপির, সাফাই তৃণমূলের, শুরু তরজা।
উল্লেক্ষ্য, কিছুদিন আগেই ঢাকঢোল পিটিয়ে হাইড্রেন প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ এলাকাবাসীর। সঙ্গে সামিল তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের একাংশ। অভিযোগ সিডিউল মেনে হচ্ছে না কাজ। দুর্নীতি হচ্ছে কাজে। সিডিউল দেখাতে চাইছে না ঠিকাদার। যদিও সিডিউল মেনে কাজ করতে হবে সাফ বার্তা জেলা পরিষদ সদস্যের। সমগ্র ঘটনা নিয়ে তীব্র খোঁচা বিজেপির। অস্বস্তিতে তৃণমূল। তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানোতোর। কিছুদিন আগেই মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াটলা বুথের আব্দুল হাউস থেকে মমিন হাউস পর্যন্ত হাইড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। জেলা পরিষদ তহবিলের ১১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শুরু হয় কাজ। শিলান্যাস করেন জেলা পরিষদ সদস্য সন্তোষ চৌধুরী। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল ছিল। এই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু কাজ শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই ছন্দপতন। কাজে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে রাস্তায় নেমে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দিল এলাকাবাসী। বিক্ষোভে শামিল এলাকার তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের একাংশ। অভিযোগ কোন রকম সিডিউল মেনে হচ্ছে না কাজ। হাই ড্রেনের জায়গায় তৈরি হচ্ছে ১০ ইঞ্চির মিনি ড্রেন। ঠিকাদারের কাছে সিডিউল চাইলে ঠিকাদার দেখাতে নারাজ। এলাকাবাসীর বক্তব্য এই রকম কাজ হলে তাদের সমস্যার কোন সমাধান হবে না। তাই তারা বিক্ষোভ দেখায়। জেলা পরিষদ সদস্য সন্তোষ চৌধুরি অবশ্য জানিয়েছেন সিডিউল মেনে কাজ করতে হবে। তিনি ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছেন এলাকাবাসীর কাছে সিডিউল দেখানোর জন্য। আর এই সমগ্র ঘটনা নিয়ে কাটমানি প্রসঙ্গে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছে জেলা বিজেপি সাংগঠনিক সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল। প্রশ্ন উঠছে বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকার কাজ হচ্ছে না কেন? সমগ্র ঘটনা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানোতোর। বিক্ষোভের ফলে চাঞ্চল্য এলাকায়।
বিক্ষোভকারী তৃণমূল কর্মী ফাজরুল ইসলাম এলাকাবাসী জানিয়েছেন, আমরা জানি হাইড্রেন হবে। কিন্তু দেখছি ১০ ইঞ্চির মিনি ড্রেন। ঠিকাদার কোন ভাবেই সিডিউল দেখাচ্ছে না। আমরা এই কাজ মানব না। বিক্ষোভকারী মোহাম্মদ মহসিন বলেন, যে মাপের ড্রেন হচ্ছে তা দিয়ে জল পাস হবে না। আমাদের নিকাশি ব্যবস্থার সমস্যা থেকেই যাবে। দলমত নির্বিশেষে আমরা সকলে চাই হাইড্রেন হোক। নিয়ম অনুযায়ী সিডিউল মেনে কাজ হোক। জেলা পরিষদ সদস্য সন্তোষ চৌধুরী জানিয়েছেন, বিক্ষোভের কথা জানতে পেরেছি। ওখানে ১১ লক্ষ টাকা খরচ করে কাজ হচ্ছে। ঠিকাদারকে বলবো এলাকাবাসীকে সিডিউল দেখাতে। সমগ্র সিডিউল মেনে কাজ করতে হবে। উত্তর মালদা জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, দুর্নীতি আর কাটমানিতে তৃণমূল শেষ। ওদের কর্মী সমর্থকরাও বুঝতে পারছে। ঠিকাদারকে কাটমানি দিতে হচ্ছে তাই নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। মানুষ আর এসব মেনে নিতে পারছে না। আসন্ন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এর জবাব দেবে।
বছর ঘুরতেই পঞ্চায়েত ভোট। উন্নয়নকে হাতিয়ার করে ভোট বৈতরণী পার করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। কিন্তু হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় বিভিন্ন সরকারী কাজে বারবার দুর্নীতির অভিযোগ করছে। প্রশ্ন উঠছে সরকার টাকা দিলেও সেই টাকা যথাযোগ্য ভাবে ব্যবহার হচ্ছে না কাজে। ফলে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে ক্ষোভ বিক্ষোভ। যা স্বাভাবিক ভাবে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে শাসকদলের।