উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৪ শে নভেম্বর ২০২২ : বৃহস্পতিবার : গাছে ঝুলে রয়েছে প্রচুর কিউই ফল কিন্তু কেনার লোক নেই। কারন এই ফলের বাজার নেই কৃষকদের কাছে। গাছে অজস্র ফল থাকতেও মাথায় হাত কৃষকদের। কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকের দূরখোলা গ্রাম এই ছবি। স্থানীয় সুত্রে জানা যায় ৪-৫ বছর আগে এই এলাকার বেশ কিছু কৃষক পরিবারের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল এই কিউই ফলের কয়েকশো চারা গাছ স্বল্প মূল্যে নাবার্ডের পক্ষ থেকে বিলি করা হয়।
সেই সময় পাহাড়ি এই গ্রামের কৃষকেরা তাঁদের চিরাচরিত স্কোয়াশ, ভুট্টা, ফুল, কফি, বাঁধা কফি, মুলো ইত্যাদি চাষের পাশাপাশি কিউই ফলের চাষ শুরু করেন। ৩ বছর পর থেকে খুব ভাল ফলন শুরু হয়। কিন্তু এত ভাল ফলন হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের মাথায় হাত পড়েছে। কারণ উৎপাদিত ফল বিক্রি করতে না পেরে পথে বসার জোগাড় ওই কৃষকদের। গত ৩ বছর ধরে চলা এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে তাঁরা সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
জানা গেছে, কিউই এমন একটি ফল যা অত্যন্ত উপকারি। বাজারে তার তেমনই চাহিদা। ডুয়ার্সের বাজারে এই কিউই ফল কখনও-কখনও কেজি প্রতি ২০০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। মিষ্টি ফলটি দেখতে অনেকটা আলুর মতো। ভেতরটা সবুজ হয়। চিনকে কিউই ফলের জন্মভূমি মনে করা হয়। নিউজিল্যান্ডের জাতীয় ফল এই কিউই। মালবাজারের এক চিকিৎসক অমিতাভ দাস বলেন, এই ফলে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় নিয়মিত খেলে হার্ট ও কিডনি খুব ভাল থাকে। একই সঙ্গে ব্লাড সুগার, উচ্চ রক্তচাপ প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে দিন দিন এই ফলটির চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। এই বাড়তি চাহিদার দিকে নজর রেখে রাজ্যের কৃষি দফতর কিউই চাষ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই ফল চাষ করে আয় অনেকটাই বাড়বে বলে জানিয়েছিল। তাঁদের সেই উদ্যোগে সাড়া দিয়ে ২০১৭ সালে গরুবাথান ব্লকের দূরখোলা গ্রামের জনা কুড়ি কৃষক কিউই চাষ শুরু করেন। এই অসহায় কৃষকদের অন্যতম ফিরোজ মুখিয়া। তিনি দাবি করে বলেন, কালিম্পংয়ে চাষ হওয়া কিউই ফল স্বাদে-মিষ্টতায় সেরা। তবু সেই ফল বিক্রি হচ্ছে না। অনেক আশা নিয়ে তাঁরা তাঁদের চিরাচরিত চাষবাস বাদ দিয়ে এই বিদেশী ফলের চাষ করেছিলেন, সফল হয়েছেন। এখন প্রচুর সুস্বাদু ফল হচ্ছে। কিন্তু বিক্রি করার জায়গা নেই। তাই তাঁরা এর বিপননের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।