18.5 C
New York
Wednesday, June 18, 2025

Buy now

spot_img

রেশন ডিলারশিপের লাইসেন্স প্রদানে বেনিয়মের অভিযোগে তদন্তে প্রশাসন।

উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ১৫ ই এপ্রিল ২০২৩ : শনিবার : বেনিয়ম ও টাকার বিনিময়ে রেশন ডিলারশিপের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল খাদ্য দপ্তরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। এনিয়ে জেলা শাসক কে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন এক আবেদনকারী। গোটা ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের চাঁচলে। গোটা ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের চাঁচলে। ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন চাঁচলের মহকুমাশাসক।

জানা গিয়েছে, চাঁচল-১ নং ব্লকের মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বরুপগঞ্জে গ্রাহকদের রেশন পরিষেবা দিতে ২০২২ সালের ২০ মে খাদ্য দপ্তরের তরফে স্বরুপগঞ্জ দুর্গামন্দিরের নিকটে নতুন রেশন ডিলারের জন্য একটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তি দেখে তিনজন আবেদন করেন। যার মধ্যে একজন মহিলা অন্য দুই জন পুরুষ আবেদনকারী ছিল। যার মধ্যে স্বরুপগঞ্জ দুর্গা মন্দির লাগোয়া বাসিন্দা গোপাল চৌধুরী এই আবেদন করে ছিলেন। আবেদনের পর শুরু হয় নথি যাচাই প্রক্রিয়া ও গোডাউন পরিদর্শন। কিন্তু কিছুদিন পর অভিযোগকারী গোপাল চৌধুরী জানতে পারেন, ১৫ কিমি দূরের এক মহিলা রেশন ডিলারশিপের লাইসেন্স পেয়েছেন। এনিয়ে সম্পূর্ণ অর্থের বিনিময় ও বে-নিয়ম ভাবে তাকে এই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন তিনি। জেলা শাসকের কাছে দায়ের করা লিখিত অভিযোগপত্রে স্বরূপগঞ্জের বাসিন্দা গোপাল চৌধুরী জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ২০ মে খাদ্য দপ্তরের তরফে স্বরূপগঞ্জে নতুন রেশনের দোকানের ডিলারশিপের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তিনি বেকার ছেলে। তাই ওই ডিলারশিপের জন্য যাবতীয় নথিপত্র সহ তিনি আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, চাঁচল শহরের বাসিন্দা কনিকাদেবীকেই রেশনের ডিলারশিপ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ খাদ্য দপ্তরের তরফে যে সব জিনিস থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল, তা কনিকাদেবীর নেই। যেমন, তিনি ভেরিফিকেশনের সময় কোনও গোডাউন দেখাতে পারেন নি। ডিলারশিপের জন্য নিজস্ব গোডাউন থাকা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছিল খাদ্য দপ্তর, অথচ কনিকাদেবীর নিজস্ব কোনও গোডাউন নেই। তিনি যে গোডাউনটি ভাড়া নিয়েছেন, সেখানে কোনও ভেন্টিলেশন নেই। ওই গোডাউনের সামনে লরি দাঁড়ানোর জায়গাও নেই। ওই গোডাউনটি মাত্র পৌনে এক শতক জমির উপর নির্মিত। গোডাউনটি অন্যের জমির উপর অবৈধ ভাবে তৈরি করা হয়েছে। এত কিছু সমস্যা থাকতেও খাদ্য দপ্তরের ইন্সপেকটর অবৈধ ভাবে কনিকাদেবীকে রেশনের ডিলারশিপ পাইয়ে দিয়েছেন বলে তিনি মনে করছেন। এর পিছনে টাকা-পয়সার অবৈধ লেনদেন থাকতে পারে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি মালদার জেলা শাসকের কাছে লিখিত আকারে অভিযোগ জানিয়েছে।

রেশন ডিলারশীপের দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসতেই রাজনৈতিক চাপানো তোর। চাঁচল ১ নং ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি আনজারুল হক বলেন, স্থানীয় আবেদনকারীকে বাদ দিয়ে ১৫ কিমি দূরের এক বাসিন্দাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। তৃণমূলের আমলে এই দুর্নীতি সম্ভব। টাকার পরিমাণ বেশি পেয়ে এই লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে,মালদা উত্তরের বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি অয়ন রায় কটাক্ষ করে বলেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রেশন সহ সমস্ত দপ্তরেই তৃণমূলের মদতে লাগামহীন দুর্নীতি করছেন আমলারা। সম্পূর্ণ টাকার বিনিময়ে বেআইনি ভাবে এই রেশনডিলারশিপের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। বিরোধীদের অভিযোগ মানতে নারাজ শাসকদল তৃণমূল। চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়া প্রশাসনের কাজ। তৃণমূলের কোনো হাত নেই। তবে  বিধায়কও বহিরাগত আবেদনকারীকে লাইসেন্স প্রদানে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন। এমনকি বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ খাদ্য দপ্তরের মন্ত্রী রথীন ঘোষকে বিষয়টি জানবেন বলে জানিয়েছেন। যদি এটা আইনে না থাকে সেই লাইসেন্স বাতিল করা হোক। অভিযোগ নিয়ে চাঁচল মহকুমা খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকের অফিসে যাওয়া হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি সম্প্রতি বদলি হয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। চাঁচলের মহকুমা শাসক কল্লোল রায় জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বেআইনি হলে পদক্ষেপ করা হবে।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!