18.5 C
New York
Wednesday, June 18, 2025

Buy now

spot_img

তীব্র দাবদাহে ব্যাপক জল কষ্ট, রাস্তায় বালতি-কলসি রেখে বিক্ষোভ এলাকার মহিলারা।

উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ২০ শে এপ্রিল ২০২৩ : বৃহস্পতিবার : এই মুহূর্তে চলছে তীব্র দাবদাহ। বিগত দুই দিনে সর্বাধিক তাপমাত্রা গেছে প্রায় ৪৩°সেলসিয়াস পর্যন্ত। গরমে হাঁসফাঁস করছে এলাকাবাসী। তারই মাঝে ব্যাপক জলকষ্ট। জলের জন্য হাহাকার করছে সমগ্র এলাকা। গ্রামে নেই পিএইচই। নেই কোন সাবমার্সিবল পাম্প। জলস্তর নেমে যাওয়ার ফলে নলকূপ গুলো থেকে উঠছে না জল। গ্রীষ্মের প্রখর দাবদাহের মাঝেই এবার জলের দাবিতে রাস্তায় মগ, বালতি রেখে বিক্ষোভ এলাকাবাসীর। প্রশ্নের মুখের সরকার এবং প্রশাসনের ভূমিকা। শাসকদলের অন্দরের কাজিয়ার ফলেই গ্রামে বাসেনি পিএইচই বিস্ফোরক অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। মানুষের জন্য নূন্যতম পরিষেবা দিতে ব্যর্থ মানুষ এদের নর্দমায় ছুড়ে ফেলবে শাসকদলকে নিশানা সিপিআইএমের। জল কষ্টের কথা মেনে নিল প্রশাসন। সাফাই তৃণমূলের। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।

মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত আঙ্গারমুণি, বড়ল বাজার সহ একাধিক এলাকায় তীব্র জল কষ্ট। বৃহস্পতিবার জলের দাবিতে এবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালো আঙ্গারমুণির সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভের সামনের সারিতে গ্রামের মহিলারা। বালতি, কলসি রাস্তায় রেখে জলের দাবীতে বিক্ষোভ।জলের অভাবে প্রচন্ড কষ্ট পাচ্ছে শিশুরা। গবাদী পশুদের স্নান করানোর জল নেই। নিত্যদিনের কাজের জল নেই।অভাব পানীয় জলেরও। এই মুহূর্তে চলছে রমজান মাস। রোজার মাঝে জলকষ্টের ফলে নাজেহাল হয়ে পড়ছে এলাকাবাসী। গ্রামে নেই কোন পিএইচই। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে বসানো হয়নি সাবমারসিবল পাম্প। ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম। বঞ্চনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে ৮ থেকে ৮০। এমনকি জানা গেছে তিন বছর আগে এই এলাকায় পিএইচই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমি নিয়ে জট তৈরি হয়। কোন জমিতে পিএইচই হবে এ নিয়ে শাসকদলের অন্তরে মতভেদ হয়। তার জেরেই এখনো হয় নি পিএইচই। যার ফলে এই তীব্র গরমে ভুগতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। আর এই সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর। সিপিআইএমের অভিযোগ শাসকদলের দুর্নীতির ফলে কোন কাজ সঠিক ভাবে হয় নি। যে কোন প্রকল্পের অর্ধেক টাকা আত্মসাৎ করেছে শাসক দলের নেতারা। যার জেরে নাজেহাল হচ্ছে মানুষ। যদিও তৃণমূলের সাফাই দাবদাহের ফলে সারা দেশ জুড়ে জলকষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে জল কষ্টের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক।

বিক্ষোভকারী বাসিন্দা নজিমুল হক বলেন, গবাদি পশুর স্নান করাতে সমস্যা তো হচ্ছেই। শিশুরাও খুব জলকষ্টে ভুগছে। এদিকে শাসকদলের নিজেদের মতবিরোধের কারণে এখানে পিএইচই হয়নি। বিক্ষোভকারী বাসিন্দা কোহিনুর বেওয়া বলেন, রোজার মধ্যে প্রচন্ড জলকষ্ট। পিএইচই না থাকায় এখানে ট্যাপ কল নেই। নলকূপ থেকে জল উঠছে না। বিক্ষোভকারী বাসিন্দা জাভেদা খাতুন বলেন, অন্যান্য এলাকায় ট্যাপ কল রয়েছে। আমাদের এলাকাতে নেই।হাজার হাজার মানুষের বাস। পানীয় জল থেকে শুরু করে স্নানের জল প্রচন্ড সমস্যা হচ্ছে। জলের দাবিতে আমরা বিক্ষোভ করছি। সিপিআইএমের জেলা কমিটির সদস্য শেখ খলিল বলেন, তৃণমূলের দুর্নীতি ছাড়া কোন কাজ হয় না। প্রত্যেকটা প্রকল্পের টাকা এরা আত্মসাৎ করেছে। কলে প্রকল্প অনুযায়ী কোন কাজ হয়নি। মানুষকে ফল ভুগতে হচ্ছে। মানুষ এদের নর্দমায় ছুড়ে ফেলবে। তুলসীহাটা অঞ্চল তৃণমূলের চেয়ারম্যান দিল রোজ বলেন, অনেক এলাকায় জলকষ্ট রয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু এই দাবদাহে তো এটা সব জায়গার সমস্যা। বিরোধীরা এতদিন কি করেছে। মমতা ব্যানার্জীর উন্নয়ন মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অনির্বান বসু বলেন, দেখুন জলকষ্ট তো হচ্ছে। আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। বিভিন্ন জায়গায় জলছত্র খোলা হচ্ছে। ভ্যামমান জলের ট্যাংকি রয়েছে একটা।

স্বাধীনতার ৭৫ বছর অতিক্রান্ত। কিন্তু আজকের দিনেও দেখা যাচ্ছে জলের দাবিতে বিক্ষোভ করছে মানুষ। জলের অপর নাম জীবন। প্রশ্ন উঠছে কোথায় উন্নয়ন বা বিকাশ? নূন্যতম পরিষেবা যেখানে পাচ্ছে না মানুষ।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!