উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৯ শে এপ্রিল ২০২৩ : শনিবার : তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে জেলায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সফরের মাঝেই তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেবার ইচ্ছে প্রকাশ করে, আশা কর্মী হিসেবেই কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন রীনা বরা। দলের জেলা সভানেত্রীকে উদ্দেশ্য করে এই মর্মে লেখা একটি চিঠি হাতে নিয়ে মালবাজার ব্লকের কুমলাই চা বাগানের শ্রমিক মহল্লায় নিজের আবাসনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের ব্লক কমিটির সভাপতি সুশীল কুমার প্রসাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটালেন এদিন রীনা। যদিও রীনার তোলা অভিযোগগুলোকে পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের মাল গ্রামীন ব্লক কমিটির সভাপতি সুশীল কুমার প্রসাদ।
এদিন ঠিক কি বলেছেন রীনা? তার বক্তব্য ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে একপ্রকার জোর করেই তাকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে মনোনীত করেছিলেন সুশীল কুমার প্রসাদ। এই সময় তিনি যে আশা কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তা দলের সকলের জানা ছিলো। সভাপতি পদে আসীন হওয়ার দিন দশেক পর থেকে হঠাৎ করেই ব্লক সভাপতি সুশীল কুমার প্রসাদ তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন বলে অভিযোগ রীনার। এমনকি সুশীল কুমার প্রসাদের বাড়িতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে তাকে সুশীল কুমার প্রসাদ অশালীন প্রস্তাবও দিয়েছিলেন বলে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন রীনা। যা নিয়ে এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব এর সকলকেই জানানো হলেও তারা সেই সময় এ নিয়ে দলীয় স্তরে কোনও উচ্চবাচ্য করে নি বলে অভিযোগ রীনার। এখানেই শেষ নয়।পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে তার ভূমিকা ছিল কাঠপুতুলের মতো। গত ৮ মাসে তাকে সামনে রেখে পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে উন্নয়নমূলক কাজের ধারা অব্যাহত থাকলেও বাস্তবে কি কাজ হবে, আর কোন কাজ হবে না, সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তই তাকে নিতে দেওয়া হয়নি। পেছন থেকে সমস্ত সিদ্ধান্ত ব্লক কমিটির সভাপতি সুশীল কুমার প্রসাদ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন রিনা। এই মুহুর্তে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে নিজেকে চূড়ান্ত অপমানিত বোধ করছেন রীনা। এই কারনেই এই পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে তিনি দলের জেলা সভানেত্রীকে চিঠি দিতে চলেছেন বলে জানিয়েছেন রীনা বরা।
অন্যদিকে, রীনার তোলা গুরুতর অভিযোগগুলো নিয়ে তৃণমূলের মাল গ্রামীন ব্লক কমিটির সভাপতি সুশীল কুমার প্রসাদ বলেন, অত্যন্ত ভদ্র মেয়ে বলেই রীনাকে চিনি ও জানি। পঞ্চায়েত পরিচালনায় তার অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই রীনাকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে মনোনীত করা হয়েছিলো। সেই রীনা যে এমন গুরুতর অভিযোগ তুলতে পারে তা কল্পনাও করতে পারছি না। সম্ভবত কোনও ট্র্যাপে পা দিয়েই ও এমন সব উল্টোপাল্টা বকতে শুরু করেছে। পাশাপাশি এমনও হতে পারে যে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় বুথ স্তর থেকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তার নাম নেই জানতে পেরেই প্রতিশোধ এবং স্পৃহা থেকে রীনা এমন সব অভিযোগ তুলছে। এছাড়াও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে রীনার গত প্রায় ৮ মাসের ভূমিকা অনেকটা কাঠপুতুলের মতো ছিলো অভিযোগের জবাবে সুশীল বলেন, পঞ্চায়েত সমিতির সমস্ত কাজ সভাপতি স্বাক্ষরিত রেজোল্যুশনের মাধ্যমে হয়। এ ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম মেনে চলা হয়েছে।