উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ২১ শে মে ২০২৩ : রবিবার : সেকেন্ড ফ্লাশ চায়ের দাম একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। উৎপাদন খরচের তুলনায় পাতার দাম কম থাকায় খুবই হতাশ হয়ে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা-চাষিরা। বিভিন্ন জেলার ছোট বাগানের চা-চাষিরা বর্তমানে সেকেন্ড ফ্লাশ চা উৎপাদন করছেন। বরাবরই সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয় সেকেন্ড ফ্লাসের চা। যদিও এবছর কাঁচা চা-পাতার দাম আচমকাই নেমে গেছে। বর্তমানে পাতা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫-১৮ টাকা প্রতি কেজি। যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে অনেক কম। বিগত বছরগুলোতে গড়ে ৩৫ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কাঁচা পাতা। এমনিতেই আবহাওয়ার ব্যাপক খামখেয়ালিপনা রয়েছে এবার। কৃত্রিমভাবে জলসেচের বিপুল খরচ রয়েছে এছাড়া লুপার, ক্যাটারপিলার, গ্রিন ফ্লাই, থ্রিভস, চা মশার মতো পোকার দাপটে উৎপাদনের পরিমাণ ক্রমশ কমছে। পোকা মাকড়ের আক্রমণ সামলাতে কীটনাশক ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে উৎপাদন খরচ। অথচ চা- পাতার সঠিক দাম পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে উৎপাদন খরচ পড়ছে প্রতি কেজি প্রায় কুড়ি টাকা। যদিও দাম নেমে যাওয়ায় উৎপাদন খরচের নিচেই পাতা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ক্ষুদ্র চা-চাষিরা। এজন্য বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। মরশুমের শুরুতেই এতো কম দাম পাওয়া গেলে বর্ষার সময় পাতার দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে চিন্তিত ক্ষুদ্র চা- চাষিরা।
এই প্রসঙ্গে বটলিফ ফ্যাক্টরিগুলোর বক্তব্য, কাঁচা চা- পাতার খুব বেশি চাহিদা নেই এখন। তা ছাড়া ফ্যাক্টরিগুলোতে প্রচুর চা জমা হয়ে রয়েছে। তাই আগামীদিনেও এমন পরিস্থিতি চললে তাদের পক্ষেও বেশিদিন ফ্যাক্টরি চালানো সম্ভব নয়। চায়ের নিলামেও গত বছরের তুলনায় চায়ের দাম উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। পাতার দামের বিষয় নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে প্রতিটি ক্ষুদ্র চা-বাগান অধ্যুষিত রাজ্যে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল টি বোর্ডের শেষ বোর্ড মিটিংয়ে। তবে আজও তা কার্যকরী হয়নি বলে জানান জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা-চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী। তিনি জানান এখনই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে আগামীদিনে পরিস্থিতি আরও খারাপের পথে যাবে। এজন্য অবিলম্বে টি বোর্ডের পক্ষ থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ডিবিআইটিএর চেয়ারম্যান তথা বড় চা বাগান ডেঙ্গুয়াজার বাগানের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জীবন চন্দ্র পান্ডে চা দিবসের শুভেচ্ছা বার্তার পাশাপাশি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে চা খুব সংকটের মধ্যে রয়েছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে চা বাগানের ভালো পাতা হচ্ছে না। ফলে চরম সমস্যায় চা শিল্প।