উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৯ শে মে ২০২৩ : সোমবার : গত কয়েকদিন যাবৎ চোরের উপদ্রব বেরেছে মালবাজার মহকুমায়। দিনে বা রাতে বাড়িতে গৃহ কর্তা না থাকলেই, চোরের দল সব চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এরকম ছবি সোমবার দেখা গেলো মাল ব্লকের চেল কলোনী এলাকায়।
চেল কলোনী এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় পাল বলেন, আমি চেল কলোনীর রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছি। সেই সময় দেখি এক অচেনা যুবক বস্তা পিঠে নিয়ে বাজারের দিকে যাচ্ছে। বস্তা প্রচন্ড ফাড়ির জন্য ঠিকঠাক হাটতে পারছে না। সন্দেহ হওয়া যুবকের বস্তা চেক করে দেখি বস্তার মধ্যে চুরি করা লোহার তার, কিছু বাসনপত্র, কিছু অ্যামিটেশনের অলঙ্কার এবং আমাদের পাড়ার মহিলা জোৎস্না বর্মনের কিছু স্ট্যাম্প সাইজের ফটো। সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবককে ধরে জোৎস্না বর্মনে বাড়িতে নিয়ে আসি এবং জোৎস্না বর্মনকে ফোন করে সব জানাই। এরপর ওই যুবককে কিছু মানুষ ওই বাড়িতেই বেধে রাখে। চেল কলনীর বাসিন্দা জোৎস্না বর্মন অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করে। সেই মতো সোমবার সকালে বাড়িতে তালা মেরে কাজে বেরিয়ে ছিলেন জোৎস্না বর্মন। বেলা ১ টা নাগাদ তিনি খবর পান তার বাড়ির দরজার তালা ভেঙ্গে চুরি হয়ে গেছে সব কিছু। এমনকি চোরও ধরা পরেছে। তড়িঘড়ি কাজ ফেলে বাড়িতে ছুটে আসেন জোৎস্না বর্মন। এসে দেখেন বাড়ির মধ্যে মানুষের ভিড়। চোরকে স্থানিয়রাই ঘরের খুটিতে বেধে রেখেছে। তারপর ঘরে ঢুকে দেখি আলমারি ভাঙ্গা। ঘরের সমস্ত জিনিস তছনছ। সোনার মালা এবং নগদ টাকা উধাও। এরপর তার কাছ থেকে চুরি হওয়া এক হাজার টাকা উদ্ধার হয় কিন্তু সোনার চেন এখনো পাওয়া যায় নি। তাই তাকে বেধে রাখা হয়। পাশাপাশি যুবকের কাছ থেকে বাড়ির ফোন নাম্বার নিয়ে ফোন করি। বাড়ির লোক জানিয়েছে তারা খুব দ্রুত জোৎস্না বর্মনের বাড়ি আসবে। তবে এদিন অন্য চিত্র দেখা গেলো জোৎস্না বর্মনের বাড়ি। তিনি আশেপাশের লোকজনকে বলেন, কেউ এই যুবককে মারধোর করবে না। আমি চাই আমার যা ক্ষতি হয়েছে, তা পুরন করুক এই যুবকের বাড়ির লোক। জোৎস্না বর্মন এদিন নিজের বাড়ির বারান্দায় ক্ষুদার্ত চোরকে খেতে দেন। মেনুতে ছিলো মাছের ঝোল, কচুর শাক, ডাল, লাউ চিংড়ি। জ্যোৎস্না বর্মন বলেন, এই যুবকের ক্ষিদে পেয়েছে দেখে আমার খাবারই তাকে দিয়ে দিলাম। সে সুস্থ্য থাকুক কিন্তু আমার সোনার চেন যেন ফিরিয়ে দেয়, তার বাড়ির লোক। পেট ভরে খাওয়া দাওয়া করিয়ে একটি ছোট্টো রুমে আটকে রাখে চোর বাবাজিকে। যতক্ষন চোরের বাড়ির লোক এসে ক্ষতিপূরণ না দিচ্ছে ততক্ষন এই চোরকে ছাড়া হবে না বলে জানান জ্যোস্না বর্মন। এব্যাপারে চুরি করতে আসা যুবকের নাম অমর সাহানি বলে জানা গেছে। তার বক্তব্য, আমি এবং আর একজন এই সব এলাকায় লোহা টিন কুরাতে এসেছিলাম। আমার সঙ্গে আর একজন ছিল, সে এইসব কাজ করেছে। তবে স্থানিয়দের বক্তব্য সব মিথ্যে কথা বলছে এই যুবক। সকালেও অন্য একজায়গায় লোহার তার চুরি করতে এসে মারধরও খেয়েছে সে। এই সব যুবকেরা নেশায় আসোক্ত। এই ভাবে বিভিন্ন বাড়িতে চুরি করে যা পায়, সেই সব জিনিস বিক্রি করে নেশা করে বলে স্থানিয়দের অভিযোগ।