উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : লাটাগুড়ি : ১৮ ই মে ২০২৪ : শনিবার : (সংবাদ দাতা – রঞ্জন সাহা ) : গরুমারা জঙ্গলের বনবস্তিতে নিজেদের যন্ত্রণাকে লুকিয়ে আজও পর্যটকদের হাত নারেন খাতাকলমে ‘মৃত’ মঙ্গলি,বাবুরাম’রা।
উত্তরের পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম সেরা গরুমারা জাতীয় উদ্যান। জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বনবস্তিগুলো। ডুয়ার্সের সৌন্দর্য উপভোগ করার উদ্দেশ্যে পর্যটকদের নিয়ে বিশেষ গাড়িতে করানো হয় জঙ্গল সাফারি। আর এই জঙ্গল সাফারির সুবাদেই পর্যটকেরা পৌঁছে যান রামসাই গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন গরুমারা জঙ্গলের মাঝে অবস্থিত বুধুরাম বনবস্তিতে ।এই বনবস্তিতেই রয়েছেন এমন মানুষ যিনি কিনা সরকারি খাতাকলমে মৃত। সালটা ছিল ২০২২-এর এপ্রিল মাস। তখন একদিকে করোনা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্ব জুড়ে, তারই মাঝে বৈশাখের এক বিকেলে জঙ্গলের ওপর দিয়ে ধেয়ে আসা কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে নিমেষেই লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল এই বনবস্তির স্বাভাবিক জনজীবন। প্রবল গতিতে ছুটে আসা ঝড়ের সামনে দাঁড়াতে পারেননি আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই মানুষের দুর্বল আস্তানা। ভাতের ডেকচি থেকে ভোটার কার্ড-নিমেষেই হারিয়ে গিয়েছিল ঝড়ের দাপটে। সেই থেকেই সরকারি খাতাকলমে ‘মৃত’ মঙ্গলি ওঁরাও। যদিও আজও বন বস্তির পথ দিয়ে ধীর গতিতে ছুটে চলা জিপসি গাড়িতে বসা সমাজের উচ্চ আসনে অবস্থানরত বহু পর্যটককেই হাত নেড়ে স্বাগত জানান সব রকমের সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত মঙ্গলি। তবে যে শুধু তিনি একাই বঞ্চিত-এমনটা নয়। বনবস্তির প্রবীণ সদস্য বাবু রাম ওঁরাও এর ও একই পরিস্থিতি, তবুও নিজের যন্ত্রণাকে লুকিয়ে গাড়িতে বসে থাকা পর্যটকদের দিকে তাকিয়ে বলে যান, ‘ভাল থাকবেন আবার আসবেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিৎ ওরাঁও এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান তাঁরা কোন দিন তাঁর কাছে আসেনি এবং তবে পুরো বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে। যাতে সমস্যা মিটিয়ে ফেলে তাদের সরকারি প্রকল্পের আওতায় এনে কিছু সুরাহা করে দেওয়া যায় তার জন্য তিনি উদ্যোগী হবেন।