উত্তর দিনাজপুর : কালিয়াগঞ্জ : ৭ই ডিসেম্বর ২০২০ : সোমবার : যে কোনো মৃত্যুই সকলকে নাড়া দেয়। তবে, অনাকাঙ্ক্ষিত অস্বাভাবিক নাবিলিকার মৃত্যুকে ঘিরে তড়িঘড়ি বিজেপির রাজনৈতিক পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই এলাকায় সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বিষয়টি এলাকার সকল সম্প্রদায়ের মানুষজন সেভাবে মেনে নিতে পারছেন না। যে কোনো ধর্মের কোনো একজন ব্যাক্তির কুকর্মের ফল কখনোই সেই সম্প্রদায়ের মানুষের উপর বর্তায় না। ঘটনা প্রবাহে আইনী বিচার ব্যবস্থায় দোষীর উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে এলাকার সকল ধর্মাবলম্বী মানুষেরা একজোট হয়েছেন। উঃ দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ৪ নং বোচাভাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত অধীন পুরিয়া মহেশপুর গ্রামে ১৭ বছরের নাবালিকা একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী সোমা সরকার গলায় ফাঁস লাগিয়ে বাড়িতেই আত্মহত্যা করে। ঘটনা সুত্রে জানা যায় ঐ এলাকার আনিসুর রহমান নামে একজন ব্যাক্তি গত শুক্রবার সন্ধ্যার পরপরেই বাড়ি ফিরে আসার পথে সোমাকে শ্লীলতাহানি করে। পরবর্তীতে এই ঘটনা জনসমক্ষে যাতে জানাজানি না হয় তারজন্য আনিসুর রহমান সোমা ও তার অভিভাবক কে হুমকির শুরে শাসিয়ে ছিল। এই ঘটনাচক্রে গ্রাম্য পরিবেশে একটি আলোচনা সভার কথা উঠলে সোমার শ্লীলতাহানির বিষয়টি জনসমক্ষে ছড়িয়ে পরবে এই লজ্জা ও ঘৃনায় নিজের সম্মান বাঁচানোর তাগিদে নিজের জীবনকে তুচ্ছ ভেবেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেয় সোমা। পরবর্তীতে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ প্রশাসন এসে সোমার মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং উক্ত এলাকায় পুলিশি ব্যবস্থা রেখে ঘটনায় অভিযুক্ত দোষী আনিসুর রহমানের তল্লাশিতে পুলিশ প্রশাসন তৎপর হয়ে উঠে। আর এই ঘটনা জানাজানি হতেই কালিয়াগঞ্জ বিজেপি নেতৃত্বরা কর্মীদের নিয়ে ধনকোল মোড়ে পথ অবরোধ শুরু করে এমনকি তাদের বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বিষয়টি বারবার করে ফুটে উঠে। সোমবার সন্ধ্যার পরপরেই পুলিশি তৎপরতায় ঘটনায় অভিযুক্ত আনিসুর রহমান কে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার সকালে আদালতে হাজির করে। সুত্র মারফত জানা যায়, মৃত সোমার পরিবার এবং আনিসুর রহমানের পরিবার রাজনৈতিক আঙ্গিনায় কোনো দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন না কিন্তু উভয়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক ছিলেন মাত্র। এই ঘটনায় অভিযুক্ত আনিসুরের উপযুক্ত শাস্তির দাবি উঠে চারিদিকে সকল ধর্মের সম্প্রদায় ভুক্ত মানুষের মধ্যে থেকে।
এদিকে অকালে এইভাবে মেয়ের মৃত্যুতে সোমার পরিবারের মানুষজন যেভাবে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ভেঙ্গে পরেছে ঠিক এমন পরিস্থিতিতে মানবিক দিক দিয়ে সোমার পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ালেন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক তপন দেব সিংহ সহ কালিয়াগঞ্জ ব্লক ও শহরের তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বরা।
সান্তনা দেওয়ার ভাষা নেই কোনো তবুও বিধায়ক থেকে শুরু করে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের কো-মেন্টর অসীম ঘোষ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সোমার বাড়িতে পৌঁছে সোমার বাবাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে তাদের পরিবারের পাশে থাকার সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দিলেন এবং উল্লিখিত অভিযুক্তের উল্লেখযোগ্য শাস্তির আশ্বাস দেন।
সোমার অস্বাভাবিক মৃত্যু কে ঘিরে বিজেপি রাজনৈতিক রং লাগিয়ে জনমানসের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করবার চক্রান্তের বিরুদ্ধে সরব হয় বিধায়ক সহ কালিয়াগঞ্জ ব্লক ও শহর তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বরা। বিজেপি নেতৃত্বরা এই ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগিয়ে পথ অবরোধ করে ফেললো নিমেষের মধ্যে কিন্তু কন্যা হারানো বাবা মায়ের কাছে সান্তনা দিতেও তাদের পাশে থাকার আশ্বাস নিয়ে তারা পৌঁছাতে পারলেন না এ রকম কথা উঠে এসেছে। সোমা আর ফিরে আসবে না মায়ের কোলে কিন্তু এক নরপিশাচ এর নক্কারজনক এহেন কার্যকলাপে সোমাকে বাবা মা পরিবারের থেকে চলে যেতে হবে এখনো কেউ বিশ্বাস করতেই পারছে না।