18.6 C
New York
Tuesday, June 17, 2025

Buy now

spot_img

ইতিহাসের বানগড় রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে আজ ব্রাত্য।

দক্ষিণ দিনাজপুরঃ ২৯শে জানুয়ারী, বুধবারঃ বানগড় খনন কার্যের অভাবে আজও মাটির নিচে চাপা পড়ে রয়েছে ২৫০০ বছরের পুরোনো বানগড়ের ইতিহাস। সেইসঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হতে বসেছে এই প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন স্থান। ১৯৩৮ সালে প্রথম বানগড়ে খনন কার্য চালানো হয়। সে সময় প্রাচীন ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য উঠে আসে। তারপর আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) উদ্যোগে বেশ কয়েকবার খনন কার্য হয়েছে। তাতে পাল, সেন ও মৌর্য যুগের বহু নির্দশন পাওয়া যায়। কিন্তু আজও খনন কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। ফলে নিতান্ত অবহেলায় পড়ে রয়েছে এই বানগড়। এনিয়ে জেলার বাসিন্দা ও ইতিহাসবিদদের মধ্যে ক্ষোভ জমেছে।

এবিষয়ে বুনিয়াদপুরের বাসিন্দা ইতিহাস ও বানগড় নিয়ে গবেষনা করা শিক্ষক অমর পাল জানান, বানগড়ের রক্ষণাবেক্ষণ খুবই প্রয়োজন। সমগ্র উত্তরবঙ্গে প্রাচীন ঐতিহাসিক নির্দশনের মধ্যে একটি। বর্তমানে খনন কার্য বন্ধ থাকার ফলে বানগড়ের বহু ইতিহাস আমাদের অজানা। প্রশাসনের কাছে আবেদন, ফের খনন কার্য শুরু করা হোক।

উল্লেখ্য, গঙ্গারামপুর ব্লকের শিববাড়িতে ঐতিহাসিক নিদর্শন সমৃদ্ধ এই বানগড় অবস্থিত। বর্তমানে এটি ঢিবির আকারে রয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্‍কালীন অধ্যাপক কুঞ্জগোবিন্দ গোস্বামীর নেতৃত্বে ১৯৩৮-১৯৪১ পর্যন্ত এখানে প্রথম খনন কাজ হয়। ১৪১ একর জায়গা জুড়ে বিশাল মাটির ঢিপি এবং চারপাশের ১০০০ একর জায়গা জুড়ে এএসআই অনুসন্ধান চালায়। তাতে মৌর্য, গুপ্ত ও সেন যুগের বহু প্রাচীন নির্দশন পাওয়া যায়। সেগুলির বেশিরভাগই বালুরঘাট মিউজিয়ামে রাখা আছে। কথিত আছে এই গড় থেকে রাজ্য শাসন করতেন বালি রাজা। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে বান রাজা হয়েছিলেন। তাঁর নাম অনুসারেই এর নাম হয়েছে বানগড়। এখানে গুপ্ত যুগের বৃহৎ দেওয়াল, তামার মুদ্রা, পাল যুগের মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, মৌর্য যুগের পাতকুয়া, পোড়ামাটির থালা, বিভিন্ন ধরনের মাটির পাত্র, পাথরের মালা, তামার মুদ্রা ইত্যাদি পাওয়া গিয়েছে। তাছাড়া পোড়ামাটির স্ত্রী মূর্তি, ব্রাহ্মীলিপি যুক্ত পোড়ামাটির শিলিং, নগর রক্ষায় নির্মিত পোড়ামাটির ক্ষেপনীও পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েকবছর ধরে খনন কার্য বন্ধ থাকায় জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে। ফলে আরও নিদর্শন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সেই সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বানগড়ের মতো অমূল্য ঐতিহাসিক নিদর্শনকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রথমেই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অন্তত সীমানা প্রাচীর দেওয়া উচিত। না হলে এই নিদর্শন একদিন হারিয়ে যাবে।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!