মালদা : ২৯শে জুন ২০২১ : মঙ্গলবার : (সংবাদ দাতা : বিশ্বজিৎ মন্ডল ) : সুযোগ নিয়ে এক ব্যক্তির বাড়িতে ডাকাতির অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে গাজোল ব্লকের গাজোল ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত চিত্তপল্লী এলাকায়। ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রী। পরিবার সূত্রের খবর আক্রান্ত ওই ব্যক্তির নাম গৌড় মন্ডল (৫০), ও তার স্ত্রী ঝর্না মন্ডল (৩৬)। আক্রান্ত ব্যক্তি মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে আক্রান্ত গৃহবধূর চিকিৎসা চলছে গাজল গ্রামীণ হাসপাতালে।
ঘটনা প্রসঙ্গে আক্রান্ত গৃহবধূ জানান, সোমবার রাত সাড়ে আটটা থেকে নটা নাগাদ দুইজন ব্যক্তি আসেন তার স্বামীর সাথে কথা বলতে। আতিথেয়তার খাতিরে তাদেরকে চা করে খাওয়ান তিনি। এরপর ওই দুই ব্যক্তি তার স্বামীকে বাইরে যেতে বলেন। তার স্বামী বাইরে যেতে অস্বীকার করলে ওই দুই ব্যক্তি জানান, আরও দুইজন আসবে তার সাথে দেখা করতে। এরপর অপর দুই ব্যক্তি আসলে দুজনের মধ্যে এক ব্যক্তি গেট খুলে তাদেরকে ভিতরে ডেকে নেন। যারা আসেন তাদের মুখে কাপড় বেধে তারা বাড়ির ভিতরে আসে।
এরপর এই অতর্কিত ভাবে হামলা করেন ওই গৃহবধূর উপরে। মাটিতে ফেলে গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে রাখে তারা। এরপর আক্রমণ করা হয় তার স্বামীর উপরে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় তার স্বামীকেও। গলায় আঘাত করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু তিনি ঘুরে গেলে আঘাত তার কানের পাশে লাগে, এরপর অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় পেটে। ধস্তাধস্তি শুরু হয় তার স্বামীর সাথে। এরপর এই সুযোগ বুঝে তিনজন পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে যায় একজন। আটকে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বাড়ির লোকেরা। অন্যদিকে গুরুতর আক্রান্ত ঐ ব্যক্তিকে রাতেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। খবর দেওয়া হয় গাজোল থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে আটক করা ঐ ব্যক্তিকে নিয়ে যায়। এদিন সকালে গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা করান আক্রান্ত ওই গৃহবধূ। তিনি জানান চিকিৎসার কারণে কিছুটা বিলম্ব হলেও গাজোল থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন তিনি।
এদিন তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির বারান্দায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে রক্ত। ভাঙ্গা রয়েছে কাপ প্লেট চেয়ার। আক্রান্ত গৃহবধূর মেয়ে জানায় চারজন মিলে এসে মা-বাবাকে মারছিল। গলায় চাকু দিয়ে ধরেছিল। খেলনা বন্দুক নিয়ে ভয় দেখাচ্ছিলো। সেই বন্দুকটি বাড়িতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানায় রাতের বেলা ট্রেনের আওয়াজ পেয়ে তারা প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলেন কোনো অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। বেরিয়ে বাড়ির ভিতরে ঝামেলা হচ্ছে দেখে তারা বাড়ির সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যেতে চাইছিলেন। কিন্তু কৌতুহল নিয়ে তারা আসতেই বাড়ি জুড়ে রক্ত দেখতে পান। এরপর খবর দেওয়া হয় গাজোল থানায়। একদিকে যেমন বিভিন্ন সূত্র মারফত উঠে আসছে পাওনা টাকা নিয়ে এই বিবাদ ঠিক তার অন্যদিকে আক্রান্ত গৃহবধূর অভিযোগ নিছকই ডাকাতির উদ্দেশ্যে এসেছিলেন তারা। এই নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন ওই গৃহবধূ। তবে ঘটনা নিয়ে রহস্যের জট থেকেই গেছে। তদন্ত শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ। পুলিশি তদন্তের পরই জানা যাবে ঘটনার সঠিক রহস্য।