জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ১লা জুলাই ২০২১ : বৃহস্পতিবার : দীর্ঘ ৬ বছরের অচলাবস্থার অবশান হলো। নতুন মালিকানার হাত ধরে খুলে গেল ডুয়ার্সের মাল ব্লকের বাগ্রাকোট চা বাগান। শ্রমিকরা নতুন আলোর আশায় উচ্ছ্বসিত। ডুয়ার্সের লিস নদীর পারে অবস্থিত এই চাবাগান এক সময় ডানকান গোষ্ঠীর দ্বারা পরিচালিত ছিল, এ গ্রেডের তকমা। প্রাণ চঞ্চল ছিল শ্রমিকদের প্রাণভরা কর্ম চঞ্চলতা।
২০১৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয় সমস্যা। শ্রমিকদের মজুরি অনিয়মিত হতে শুরু করে। তারপর র্যাশানও অনিয়মিত হয়ে পড়ে। পরে এক সময় মজুরি বন্ধ হয়ে যায়। বাগান ছেড়ে চলে যায় চা বাগান কর্তৃপক্ষ। বন্ধ হয়ে যায় চাবাগানের স্বাস্থ্য পরিসেবা। সব দিশা বন্ধ হয়ে শ্রমিকরা চরম অনটনে পড়ে। এরপর শুরু হয় মৃত্যুর মিছিল। বেশ কিছু শ্রমিক অর্থের অভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে না পেরে মারা যায়। কর্মহীন হয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। একাধিক বার পথ অবরোধও করে। অবশেষে গত রবিবার শিলিগুড়ির দাগাপুর এক চুক্তির মাধ্যমে সন্মেলন টি এন্ড বেভারেজ কোম্পানি নামের এক নতুন মালিক এই চাবাগান পরিচালনার দায়িত্ব বুঝে নেয়।
সে দিন নতুন মালিকানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ১ জুলাই থেকে বাগান খুলে দেবে। সেই কথা মতোই বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ রীতিমতো পুজো দিয়ে ফিতে কেটে চাবাগান খুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী বুলু চিক বরাইক, নতুন কোম্পানির কর্নধার সুরজিত বক্সি ও তার ছেলে সন্মেলন বক্সি, সাংসদ জন বারলা, শ্রমিক নেতা মুনিকুমার ডার্নেল,পুলিন গোলদার প্রমুখ।
বাগান খুলে দিয়ে নতুন মালিক সুরজিত বক্সি বলেন, প্রতিশ্রুতি মতো বাগান খুলে দেওয়া হল। শ্রমিকদের বকেয়া আস্তে আস্তে দিয়ে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার থেকেই চাবাগানে প্রবিডেন্ট ফান্ড চালু করে দেওয়া হয়েছে। নাগেশ্বরী, কিলকোট চাবাগানে সরকারি সহযোগিতা পেলে, ওই দুই বাগানও খোলার চেষ্টা করা হবে।
মন্ত্রী বুলু চিকবরাইক বলেন, বাগান খুলে যাওয়ার ফলে শ্রমিকরা স্বস্তি পেল। বৃহস্পতিবার বাগান খোলাকে কেন্দ্র শ্রমিকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। চাবাগানের কর্মী সবিতা ছেত্রীরা জানান, আজ আমাদের বড়ই খুশির দিন। টানা ছয় বছর অনেক সমস্যার চলতে হয়েছে। বহু কষ্টের পর আজ বাগান খোলাতে আমরা খুবই খশি।