উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ৯ই জুলাই ২০২১ : শুক্রবার : গত সাত বছর আগে মাল ব্লকের বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনালি চাবাগানের ম্যানেজার, ওই বাগানেই খুন হন। তারপর সাত বছর পেরিয়ে গেলেও হাল ফেরেনি সোনালি চা বাগানের শ্রমিকদের। এখনও নিয়মিত কাজ করেও ন্যায্য পাওনা মজুরির পাচ্ছে না বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। বর্তমানে এই চা বাগানের ৩৫৮ জন স্থায়ী শ্রমিকদের বক্তব্য, অন্য সব চা-বাগানে শ্রমিকদের মজুরি যে ভাবে বেড়েছে, তাদের বাগানে সে ভাবে বাড়ে নি মজুরি। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসের ২২ তারিখ রাতে, এই চা-বাগানেই খুন হন বাগানের ম্যানেজার।
জানা গেছে দীর্ঘদিনের বকেয়া পাওনা-গণ্ডা নিয়ে ক্ষিপ্ত শ্রমিকদের একাংশ বাগানের অফিসের ঢিল ছোড়া দুরত্বে চা-বাগানে নৃশংস ভাবে খুন করে সোনালি চা বাগানের পুরনো মালিক রাজেশ ঝুনঝুনওয়ালা ( আগরওয়াল) কে। এরপর মাঝে ৬ মাস বন্ধ থাকার পর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নতুন এক মালিকের হাত ধরে ২০১৫ সাল থেকে চালু হয় এই চাবাগান। বর্তমান এই চাবানটি ২০৬ হেক্টরের। নতুন মালিক কে ঘিরে শ্রমিকদের প্রত্যাশা ছিলো অনেক। কিন্তু তা যে বাস্তবে মিল খাবে না, তা বুঝতে পারেনি শ্রমিকেরা। শ্রমিকদের অভিযোগ নিয়মিত কাজ করেও ন্যায্য মজুরির মিলছে না। সমস্ত চা বাগানে যখন সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে মজুরি দেওয়া হছে, তখন এই চা বাগানে দৈনিক মজুরি কম দেওয়া হচ্ছে।
তৃনমুল কংগ্রেস প্রভাবিত টিডিপিডব্লিউইউ’র ইউনিট সভাপতি বাবুলাল ওরাও বলেন, ২০১৫ সালের ১৯ জুন নতুন মালিকের সাথে চুক্তি মোতাবেক শ্রমিকদের পিএফ, গ্র্যাচুইটি সব আপ টু ডেট থাকার কথা। কিন্তু গত ৬ বছরে বারবার জানতে চাইলেও এ সংক্রান্ত কোনও নথিপত্র আমাদের দেখানো হয়নি। শুধুমাত্র মৌখিকভাবে আমাদের জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৭ সালে বাকি সব চা বাগানে শ্রমিকদের মজুরি ১৭৬ টাকা করে দেওয়া হলেও সোনালি চা বাগানের শ্রমিকদের দেওয়া হয়েছে ১৬৭ টাকা। এরপর পুনরায় মজুরি বৃদ্ধি হয়ে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২ টাকা মজুরি দেওয়া শুরু হলেও ২০২১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সোনালি চা বাগানের শ্রমিকদের ১৬৭ টাকা করেই দিয়েছেন মালিকপক্ষ। এব্যাপারে বিভিন্ন বৈঠকে মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করে ১৯৩ টাকা দিতে শুরু করেছেন মালিকপক্ষ। শ্রমিকদের দাবী গত চারটি পাক্ষিকের পাওনা এখনও বকেয়া পড়ে রয়েছে। কবে পাবো তার নিশ্চয়তা নেই।
শ্রমিকদের অভিযোগ মানতে চাননি বর্তমান সোনালি চা বাগানের ম্যানেজার সৌরভ সেন। পিএফ, গ্র্যাচুইটি নিয়মিত এবং ঠিকভাবেই জমা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি সমস্যার মূলে যে সোনালি চা বাগানের শতবর্ষ পেরোনো চা গাছ তা উল্লেখ করেন তিনি। চা পাতা উৎপাদন দিনের পর দিন কমে আসছে। আর সেই জন্য কিছু সমস্যা হচ্ছে। আগামীতে সব মিটে যাবে।