22.2 C
New York
Friday, June 20, 2025

Buy now

spot_img

কাঁচা হাতে মায়ের মূর্তি তৈরি করে তিন বছর থেকে নিজেই আরাধনায় গোপাল।

উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৩ রা অক্টোবর ২০২১ : রবিবার : (সংবাদ দাতা : বিশ্বজিৎ মন্ডল ) : মাগো তুমি সর্বজনীন। আছো হৃদয় জুড়ে ত্রিভুবনে আছো মাগো আছো মাটির ঘরে। সত্যিই ত্রিনয়নী মা রয়েছে সকলের হৃদয় জুড়ে। তাই তো কাঁচা হাতে মায়ের মূর্তি তৈরি করে নিজেই আরাধনা করছেন মালদা শহরে গোপাল ভৌমিক। বিগ বাজেটের থিমের পুজো থেকে ঠাকুর দালানের প্রাচীর পুজোর জৌলুস, মিস্টার থেকে কিছু অংশে কম নয় সেই গোপালের ভাঙ্গা ঘরে মায়ের আরাধনায়। পুজো করতে ভালো লাগে, তাই কাজের ফাঁকে দেবী মূর্তি তৈরি করে তিন বছর ধরে পূজো করে আসছেন বছর একুশের গোপাল ভৌমিক। মালদা শহরের গয়েশপুর বিদ্যাসাগর পল্লীর বাসিন্দারা হলেন গোপাল। ইটের দেয়াল তোলা একচালা বাড়িতে পেশায় শ্রমিক বাবা ও মা ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন। সংসারের হাল ধরতে গোপাল বাবুর এখন একটি ঔষধ দোকান এর কর্মী। দিনভর কাজ তাই সময় তেমন নেই। রাত জেগে মায়ের চিন্ময়ী রূপ তৈরীর ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। হাতে আর কয়েকদিন বাকি তাই গভীর রাত জেগে মাটির প্রলেপ দেওয়া চলছে। তারপর রং করা থেকে সার্চ পড়ানোর বহু কাজ বাকি রয়েছে। একা হতে প্রায় সমস্ত কিছুই তাকে সামলাতে হচ্ছে।

পুজোর পাঁচদিন নিজের হাতে মায়ের পুজো আরাধনায় ব্যস্ত থাকে গোপাল। দশমীতে মহানন্দা নদীর ঘাটে দেবী মূর্তি বিসর্জন দিয়ে আগামী বছরে প্রহর গোনা শুরু হয়ে যায়। প্রথম দিকে সমস্ত কিছু নিজেকেই করত হত। তবে এখন পরিবার থেকে প্রতিবেশী সকলেই গোপালের উৎসাহ দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রতিমা তৈরীর সময় প্রতিবেশী কাকু জেঠিমার ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেন। আবার পুজোর খরচ জোগাড় করতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এবছর প্রতিবেশী এক কাকিমা গোপালকে তার পুজোয় উৎসাহ দিতে দায়িত্বভার নিজেই নিয়েছেন রিতা স্বর্ণকার। এর আগে কখনও প্রতিমার সাজ তৈরি করেননি তিনি। বাজার থেকে জরি-চুমকি কিনে তৈরি করেছেন দেবী দুর্গার সাজ। রিতা স্বর্ণকার বলেন ওর পুজো আমাদের খুব ভালো লাগে। তিন বছর ধরে করে আসছে। খুব নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো করে। আমরা পুজোর পাঁচদিন এই পুজোয় মেতে উঠি। এবার আমি নিজে থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এতে আমার খুব ভালো লাগছে। পঞ্চমীতে ঘট বসিয়ে নারায়ণকে স্মরণ করে নিজের হাতে গড়া প্রতিমা পূজার সূচনা করেন গোপাল। আলাদা করে কলা-বৌ না করে মাটি দিয়ে তৈরি করেন। সেখানেই হয় কলা-বৌয়ের পুজো। অষ্টমীতে পুষ্পাঞ্জলী দিতে আসেন প্রতিবেশীরা। নবমীতে পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। দশমীতে সিঁদুর খেলে মূর্তি বিসর্জন হবে মহানন্দা ঘাটে। গোপালের কথায় আমার পুজো করতে ভালো লাগে তাই করি। আমি সমস্ত নিয়ম জানি না। তাই মন্ত্রের বই কিনেছি। বই দেখে পুজো করি। হয়তো ঢাকের কাঠি পড়েন না বা পুরোহিত এর আরতী হয় না। তারপরে গোপালের পুজো আন্তরিকভাবে কথার কথা স্বীকার করেছেন প্রতিবেশীরা। কারণ গোপাল নিজের উদ্যোগে যে টুকু করে তা খুবই নিষ্ঠার সাথে। তাইতো পাড়া-প্রতিবেশীরা এখন সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এই পুজোয়। সকলেই চাইছেন গোপাল পূজার আরো শ্রী বৃদ্ধি হোক। প্রতিবেশী বিপুল চৌধুরী বলেন গোপাল খুব আন্তরিক ভাবে পুজো করে। এটাই ভালো লাগে। আমরা যেটুকু পারি সাহায্য করি। খুব নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো দেয়, তাই আমাদের খুব ভালো লাগে।

সম্পর্কিত খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

22,878FansLike
3,912FollowersFollow
14,700SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক খবর

error: Content is protected !!