উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ১৬ই জানুয়ারী ২০২২ : রবিবার : কথায় আছে “যেমন দ্যাও এর ত্যামন পূজা, মাশান দ্যাও এর ভাজা ভুজা”। রাজবংশী-কামতাপুরী জনজাতির লোকদেবতা হলো মাশান। মাশান দেবতার পূজা যা ক্রমশঃ হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই মাশান দেবতার পুজোয় মেতে উঠলো ময়নাগুড়ি ব্লকের রামশাই গ্রাম পঞ্চায়েতের কাউয়াগাব এলাকার মানুষ। ওই এলাকার নীলাবতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা এবছর চতুর্থ বর্ষ মাশান পূজার আয়োজন করেছে। শনিবার নব নির্মিত মন্দিরের শুভ উদ্বোধন হয়। এদিন মন্দিরের উদ্বোধন করেন রামশাই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রত্নেশ্বর রায়। এছাড়াও হাজির ছিলেন ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ভূপেন রায় সহ প্রমুখরা। এদিন দেশী বাজনা এবং ঢাকের তালে অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর আমন্ত্রিত অতিথিরা মন্দিরের শুভ উদ্বোধন করেন। ক্লাব সূত্রে জানা গেছে, এই মন্দির নির্মাণ করতে তাদের প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। পুরো মন্দির টাইলস দিয়ে বানানো হয়েছে। এমনকি তারা এমনটাও দাবি করেন এই ধরণের মন্দির রামশাই অঞ্চলে এটাই প্রথম। রামশাই এর নীলাবতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা সেই উদ্দেশ্যেই এই পুজো করেন। এই পুজোয় প্রসাদ রূপে খাওয়ানো হয় দই, চিড়া, গুড়, লবন ও লঙ্কা। এদিনের এই পূজাকে কেন্দ্র করে প্রসাদ রূপে প্রায় ৪০মন চিড়া, ১০০০ লিটার দই ও ৬০০ কেজি গুড় এর ব্যবস্থা রাখা হয়।
রাজবংশী কামতাপুরী সংস্কৃতির এই মাশান দেবতা যে হারাতে বসেছে সেটাকে ধরে রাখতেই এই চেষ্টা বলে জানান নীলাবতী সমাজ কল্যাণ সংস্থার সম্পাদক। তবে প্রতি বছর যাক জমক ভাবে করা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এবছর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সংস্থার সভাপতি শ্যামল রায় বলেন, এবছর আমাদের মন্দিরের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই মন্দির নির্মাণ হয়। এই পুজো উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন রকম কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকি। কিন্তু এবছর পরিকল্পনা থাকলেও করোনার কারনে তা হয় নি। আমরা এবছর পুজোর প্রসাদ হিসাবে রাজবংশী কামতাপুরীদের খাদ্য তালিকার অন্যতম খাদ্য দই চিড়া খাওয়ানো হয়। সর্বমোট ৪০ মন ধানের চিড়া করা হয় এবং ১০০০ লিটার দই এবং ৬ কুইন্টাইল গুড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও দুঃস্থদের শীত বস্ত্র প্রদান রয়েছে ক্লাবের পক্ষ থেকে। মূলত আমাদের আরাধ্য দেবতার পুজো ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সেটাকে ধরে রাখার চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।