উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৬ ই মার্চ ২০২২ : রবিবার : বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই পাঁচ ভাইয়ের ২৪ টি ঘর। অগ্নিকাণ্ডটি ঘটেছে শনিবার রাত সাতটা নাগাদ মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নম্বর ব্লকের সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বৈজনাথপুর গ্রামে। ঘটনা স্থলে দমকলের দুটি ইঞ্জিন এবং হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে খবর। এই নিয়ে গোটা এলাকা জুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ক্ষতি-গ্রস্ত ঘরগুলি হলো, পিতা সায়েদ আলি ও তার পাঁচ ছেলে হাসেন আলি, হুসেন আলি, এক্রামূল হক, নাজিমূল হক ও বাদল আলি। তবে আগুনে হতাহতের কোনো খবর না থাকলেও সম্পূর্ণ ভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে পাঁচ ভাইয়ের মোট ২৪ টি ঘর, তিনটি গবাদি পশু, পাঁচটি বাইক, আসবাবপত্র, নগদ টাকা, অলঙ্কার এবং বাড়িতে মজুত রাখা শস্য, জমির দলিল ও ঘরের টিন সহ প্রায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে যান তৃণমূল জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান, সঙ্গে ছিলেন সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান। এক মাসের খাদ্য সামগ্রী সহ কিছু আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বুলবুল খান।
পরিবার সূত্রে জানা যায় বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডারে রান্না করার সময় সিলিন্ডার ফেটে আচমকাই আগুন ধরে যায় রান্না ঘরে। এরপরেই চোখের নিমেষে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। একেরপর এক আগুন লেগে যায় আরও ২৩টি ঘরে। পাঁচ ভাইয়ের বাড়ি গ্রামের বাইরে ফাঁকা মাঠে থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলাকার বিশেষ কেউ হাত লাগাতে পারেনি। তবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ ও দমকলের দুটি ইঞ্জিন। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে দমকল বাহিনী। বর্তমানে পরিবারগুলি পলিথিন টাঙিয়ে বাঁধের উপর খোলা আকাশের নিচে ঠাই নিয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান এবং উপপ্রধানকে নিয়ে ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূল নেতা বুলবুল খান। ব্যক্তিগত ভাবে সাহায্যের পাশাপাশি তিনি ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। খবর পেয়ে ছুটে যান এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তজমুল হোসেন। তিনিও সমস্ত রকম ভাবে তাদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। সায়েদ আলী বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আগুন লাগে। কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাড়ি থেকে আমরা কিছুই বের করতে পারিনি। সমস্ত কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। হাসেন আলী বলেন, আমরা সেই সময় কাজে বাইরে ছিলাম। বাড়িতে শুধু বাবা, মা এবং দুই ভাই বউ ছিল। আমাদের পাঁচটি বাইক ছিল, ২৪ টা ঘর, ঘরের ভেতর সব আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। আমরা চাইছি সরকার থেকে আমাদের সমস্ত ভাবে সাহায্য করা হোক।
মালদা জেলা তৃণমূলের সাধারন সম্পাদক বুলবুল খান বলেন, গতকাল গভীর রাতে এই খবর পাই। সকালেই ছুটে এসেছি। আমার সাথে এলাকার প্রধান এবং উপ-প্রধান ছিল। ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক এবং পলিথিন দিয়ে সাহায্য করলাম। বিডিও কে জানানো হয়েছে। প্রশাসনিক ভাবে ও আমরা সমস্ত রকম সহায়তা করার চেষ্টা করব। বিধায়ক তজমুল হোসেন বলেন, আমি কলকাতায় ছিলাম ঘটনাটা শুনতে পেয়ে ছুটে আসি। সমস্ত রকম ভাবে পাশে থাকার চেষ্টা করব। বিধায়ক তহবিল থেকে সাহায্য করা গেলে সেটাও করব। তৃণমূল নেতা বুলবুল খান ও স্থানীয় বিধায়ক তজমুল হোসেন এলাকায় মানুষের বিপদ হলে ছুটে যান। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে প্রশাসনের উচিত এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। কারন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ফলে তাদের সবকিছু ভস্মীভূত হয়ে গেছে। প্রশাসন পাশে না দাঁড়ালে এই মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়ানো ওই পরিবারের পক্ষে অসম্ভব। যদিও জন-প্রতিনিধিরা আশ্বাস দিচ্ছেন পাশে থাকার।