উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ৩ রা এপ্রিল ২০২২ : রবিবার : ডুয়ার্সে ফের বাঘের আতঙ্ক। এবার ছাগলের লোভে জন বসতি এলাকায় ঘরের মধ্যেই ঢুকে পরলো বড় চিতাবাঘ। চিতাবাঘের হাত থেকে কোন ক্রমে প্রানে বাচলো মা ও মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত ১০র দিকে মালবাজার মহকুমার ক্রান্তি ব্লকের উত্তর খালপাড়া মৌজায় অমল রায় এর বাড়িতে।
জানা গেছে, এদিন অমল রায় এর স্ত্রী সুনীতি রায় এবং উনার মেয়ে রান্নাবান্না সেরে শোয়ার ঘরে খাটের ওপর বসে ছিলেন। আর খাটের নিচে রাখা ছিলো ছাগল। হঠাৎ ঘরের বেড়া ভেঙ্গে একটি চিতাবাঘ ঢুকে পড়ে। খাটের নিচে ছাগলকে পাকড়াও করে। আর এই দৃশ্য দেখে চিৎকার চ্যাচামেচি শুরু করে দেয় সুনীতি রায় এবং উনার মেয়ে। এরপর আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে, কোন ক্রমে মা ও মেয়েকে ঘর থেকে বের করে দরজা বন্ধ করে দেয়। যেহেতু চিতাবাঘটি ছাগলের গলা কামড়ে ধরে ছিলো তাই অন্য কারোর ওপর আক্রমন করেনি। তৎক্ষণাৎ ক্রান্তি ফাঁড়ি ও কাঠাম বাড়ি আপাল চাঁদ বন দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং কাঠাম বাড়ি আপাল চাঁদ রেঞ্জের বনদপ্তরের কর্মী ও মালবাজার ওয়ার্ল্ড লাইভ কর্মীরা ঘটনা স্থলে পৌছয়। সেই সময় একদিকে বৃষ্টি এবং চারদিকে মানুষের ভিড় থাকায় খুব সাবধানে চিতাবাঘটিকে ট্র্যাঙ্কুলাইস করে বন কর্মিরা।
অমল রায় এর স্ত্রী সুনীতি রায় বলেন, শোবার ঘরে ছাগল ছিল শোবার ঘরের ফাঁকা দিয়ে বাঘ ঢুকে ছাগলটিকে ধরে আমরা চিৎকার চ্যাচামেচি করলে পাশের বাড়ির লোক এসে আমাদের বের করে। বনদপ্তরের আধিকারিকরা এসে বাঘটিকে উদ্ধার করে। তবে আমাদের কোনো ক্ষতি হয়নি শুধু ছাগলটির মৃত্যু হয়েছে। মালবাজার ওয়াইল্ড লাইফের রেঞ্জার দীপেন সুব্বা জানিয়েছেন, খুব সাবধানে চিতাবাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে কাবু করা হয়েছে। রাতেই লাটাগুড়ির এন.আই.সি. তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুইদিন অবজারভেশনে রাখার পরে বাঘটি ছাড়া হবে। লোকালয়ে বাঘ ঘরের মধ্যে ঢোকায় এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে এলাকার পরিবেশ প্রেমী নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ নন্দী বলেন, কপাল ভালো চিতাবাঘটি ছাগলকেই এটাক্ করে ছিলো। ছাগল না থাকালে বা পালিয়ে গেলে, মা ও মেয়ের ওপর আক্রমণ করতে পারতো। এব্যাপারে বনদপ্তরকে আরও বেশি অ্যাওয়ারনেস করতে হবে এলাকায়। পাশাপাশি এলাকায় টহলদারি বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে আমরা সহযোগীতা করবো।