উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ১২ ই মে ২০২২ : বৃহস্পতিবার : ভাইপোকে টাকা চুরি করতে ধরে ফেলায় কাকাকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুন করলো ভাইপো। ঘটনার তদন্তে নেমেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে, চাঞ্চল্য এলাকায়।
নেশা-গ্রস্ত ভাইপো মাঝে মাঝেই বাবার ক্যাশবাক্স ভেঙে টাকা চুরি করত। আর এই চুরি হাতে নাতে ধরে ভাইপোর হাতে প্রাণ গেল কাকার। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত্রে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার মহেন্দ্রপুর গ্রামে। মৃত ব্যক্তির নাম মোঃ তোজি(৫৫)। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা জুড়ে। পলাতক অভিযুক্ত ভাইপো। অভিযোগ পেয়ে সমস্ত ঘটনার তদন্তে নেমেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা জহুর আহমেদ পেশায় রেশন ডিলার। জহুরের ছেলে সেকেল আলী বহুদিন থেকে নেশাগ্রস্ত। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ সেকেল ব্রাউন সুগার সহ বিভিন্ন নেশায় আসক্ত ছিল। তার জন্য রেশন ডিলার বাবার ক্যাশ বাক্স ভেঙে বহুবার টাকা চুরি করেছে, ধরাও পড়েছে বহুবার। সম্প্রতি পুনরায় সে বাবার রেশন দোকানে ক্যাশ বাক্স ভেঙে টাকা চুরি করে এবং সেই টাকা চুরির ঘটনা চোখে পড়ে কাকার। এই ঘটনার পরই সোহেলের বাবার সামনে তার কাকা মোহাম্মদ তোজি ভাইপোকে শাসন করে। এই ঘটনার কিছুদিন পরেই বুধবার রাত্রে মোহাম্মদ তোজি মহেন্দ্রপুর পেট্রলপাম সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানের কাছে একটি ভুটভুটিতে বসে ছিলেন। সেই সময় ভাইপো সেকেল আলী পিছন থেকে বাঁশ নিয়ে কাকাকে আক্রমণ করে। বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটায় মোহাম্মদ তোজীকে। ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারায় রক্তাক্ত মোহাম্মদ তোজী। গ্রামবাসীরা তাকে স্থানীয় হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করলে অবস্থা আশঙ্কাজনক তড়িঘড়ি চাঁচল মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত ভাইপো সেকেল আলী। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে আসে ওই গ্রামের তৃণমূল মেম্বার মোহাম্মদ মুজাহিদ। তিনি জানান ভাইপোকে শাসন করায় কাকাকে খুন হতে হলো। বুধবার রাত্রে এই ঘটনা ঘটেছে। ছেলেটি নেশাগ্রস্ত ছিল। টাকা চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ায় কাকা মোহাম্মদ তজী তাকে শাসন করে এর আগে। বুধবার বাঁশ নিয়ে তার ভাইপো তাকে আক্রমণ করে এবং নৃশংস ভাবে পেটায়। এরপরই হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আমরা অভিযুক্ত ভাইপোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমরা প্রশাসনিক ভাবে এই পরিবারটির পাশে সব রকম সাহায্য করবো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মোহাম্মদ তোজির তিন মেয়ে, এক ছেলে। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে এলাকায় মজুরি করে। ছোট মেয়ে সেরজুনি খাতুন জানালেন, আমাদের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য বাবাকে হারিয়ে আমরা পথে বসলাম। কি ভাবে কি করব বুঝতে পারছিনা। আমার বাবার খুনীর জন্য উপযুক্ত সাজা হয় এটাই আমাদের দাবী। এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর বিকাশ হালদার জানান, ঘটনার অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে বিভিন্ন এলাকায়।