উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২১ শে মে ২০২২ : শনিবার : ধর্মের নামে বর্নের নামে বিভাজন হলে শোষকের সুবিধা হয়।সেজন্য বর্তমানে শাসক শ্রেনী ধর্মের নামে বর্নের নামে বিভাজন করে। দিল্লীতে সম্মেলিত কৃষকরা যখন কর্পোরেটদের হাত থেকে নিজদের অধিকার রক্ষার জন্য লড়াইতে নেমেছিল তখন বর্তমান শাসক শ্রেণী পাঞ্জাবের পাগড়ি পড়া কৃষকদের খালিস্থানী বলেছিল। লুঙ্গি পড়া কৃষকদের মুসলিম বলে অবিহিত করেছিল। এভাবেই বিভাজন করে, তাতে শোষকের সুবিধা হয়। শাসকদের এই নীতির বিরুদ্ধে কৃষক ও শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের দিশা দিয়েছিল তেভাগা আন্দোলন। আমরা বিভাজন হতে দেবো না। শনিবার মেটেলি ব্লকের বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবাড়ি মাঠে তেভাগা আন্দোলনের ৭৫ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সভার ভাষন দিতে গিয়ে এই কথা বলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম।
এদিন মহঃ সেলিম কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই সরকারের বিরুদ্ধে যথেষ্ট সোচ্চার ছিলেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রে মোদি সরকারের লুট ও রাজ্যে দিদির সরকারের লুট চলছে। চিটফান্ডে যখন টাকা লুট হয়ছিল তখন আমরা বলেছিলাম টাকা ফেরত দিতে হবে। আজ আদালত বলছে অবৈধ ভাবে যারা চাকুরি পেয়েছে তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। এজন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা এর বিরোধিতা করে যাব। আমরা বামপন্থীরা ঐক্যের কথা বলি, দক্ষিণ পন্থীরা বিভাজনের কথা বলে। মানুষের ঐক্য থাকলে রাজ্য ঠিক থাকবে। দেশ ঠিক থাকবে। এই ঐক্যের কথা তেভাগা আন্দোলনের শহীদরা শিখিয়ে গেছে।
এদিন মেটেলি ব্লকের বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কলাবাড়ি মাঠে তেভাগা আন্দোলনের ৭৫ তম বর্ষ পুর্তি উপলক্ষে জনসভার আয়োজন করেছিল সারা ভারত কৃষকসভার জলপাইগুড়ি জেলা কমিটি। জনসভার সময় ছিল দুপুর ২টায়। নির্দিষ্ট সময়ে মাঠ সংলগ্ন জ্যোতি সংঘের সামনে এসে পৌছান সিপিএমের রাজ্য কমিটির সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তার আগেই এসে পৌছান জেলা প্রবীণ কৃষক নেতা প্রাক্তন সাংসদ অধ্যাপক জিতেন দাস অন্যান্য নেতৃত্ব। জ্যোতি সংঘের মাঠে এক স্মারক স্তম্ভের আভরণ উন্মোচন করেন জিতেন দাস। এরপর চারাগাছ লাগিয়ে তেভাগা আন্দোলনের ৭৫ তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের সুচনা করেন মহম্মদ সেলিম। এরপর নেতাদের বরণ করে কলাবাড়ি মাঠের মঞ্চে নিয়ে আসেন স্থানীয় নেতৃত্ব। তখন শুরু হয় বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে কিছু সময়ের মধ্যে ভরে ওঠে মাঠ। এরপর তেভাগা আন্দোলনের ইতিহাস ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সম্পাদক সলীল আচার্য, রাজ্য সম্পাদক মন্ডলির সদস্য জিয়াউল আলম সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সভা শেষ হয় তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক শুকরা ওরাওয়ের গান দিয়ে।