উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ৯ ই জুন ২০২২ : বৃহস্পতিবার : সাধারণত জামাই ষষ্ঠী থেকে বাজার দখল করে মালদার আম। মালদার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি অন্য রাজ্যগুলিতে সময় আম পাঠাতে সক্ষম হন ব্যবসায়ীরা। মালদা জেলায় ৩১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। তবে এবার আমের ফলন অনেকটাই কমে গিয়েছে আবহাওয়া খামখেয়ালিপনা ও ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি হওয়ার ফলে অনেক ফল নষ্ট হয়েছে। বাজার ধরতে কাঁচা অবস্থায় গাছ থেকে আম পেরে নিয়েছেন আম চাষীরা। এই অবস্থায় আম চাষের খরচ উঠবে কিনা তা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষীরা। আর এসবের মধ্যে কাঁচা আম কে পরিপক্ক আম পাকাতে রাসায়নিক ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে মালদা জেলার বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। আম পাকানোর ক্ষেত্রে কার্বোহাইড মেশানো হচ্ছে এমন অভিযোগ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। ইংরেজবাজার শহরের আম বাজারে দেখা গেল ভিন রাজ্যে আম পাঠানোর চরম ব্যস্ততা। আমগুলি কার্টুনে ভরার সময় কার্বাইড দেওয়া হচ্ছে। মালদার বাজারে গোপালভোগ, লক্ষণভোগ, ল্যাংড়া, চলে এসেছে। সেই আমগুলি বাজার ধরতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা ইথিলিন ও কার্বাইড দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে দ্রুত কাঁচা আম অপরিপূর্ণ অবস্থায় গাছ থেকে পেরে সে গুলি ইথিলিন বা কার্বাইড দিয়ে প্যাকিং করা হচ্ছে। প্যাকিং করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে আম পেকে যায়।
জানা যায়, এই প্যাকেট ইথিলিন চীন থেকে আসছে। মালদা আমের ক্ষেত্রেই জিআই ট্যাগ পেয়েছে লক্ষণভোগ ,ফজলি, ও হিমসাগর। আমের সেরা এই মালদা জেলায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের লাভ এর জন্য তারা এই ভাবে রাসায়নিক ইথিলিন, কার্বাইড দিয়ে আম পাঁকাচ্ছে। যদিও যারা এই কাজ করছে তাদের কথায় এই আম খেতে তেমন কোনো স্বাদ হয় না। তবুও মানুষ আম খাচ্ছে। প্যাকিং করার সময় এক শ্রমিক অসীম মন্ডল জানান, কার্বাইড দিয়ে আম পাকানোর পর আম এখন বিহার, ঝাড়খণ্ডের দিকে যাচ্ছে। এই বাজার থেকেই প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টি গাড়ি লোড করে বাইরে আম যাচ্ছে। কাঁচা অবস্থাতে আম পেড়ে নিয়ে কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়। এই ভাবে পাকানো আম তেমন কোনো স্বাদ পাওয়া যায় না, বরঞ্চ ক্ষতি হয়। খাওয়াটা ক্ষতিকারক পেটের বিভিন্ন সমস্যা সহ লিভারের ক্ষতি করে। তবুও বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আম ব্যবসায়ী দীপক সাও জানান, ঝাড়খণ্ড থেকে প্রতিবারই আমের সিজনে মালদা এসে আম নিয়ে যায় তবে এবার আম দাম একটু বেশি হলেও বাজার আপাতত ঠিক আছে। ২৬ থেকে ২৭ টাকা কিলো দরে আম কিনতে হয় কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয় তবে এর স্বাদ ভালো হয় না। তবে, গাছ পাকা আম আর কার্বাইড-এ পাকা আমের স্বাদ অনেক ফারাক আছে। বাজার ধরতে এই কার্বাইড দেওয়া আম আমাদের কিনে বিক্রি করতে হয়।
জেলা উদ্যান বনদপ্তরের আধিকারিক সামন্ত লাইক জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের আমের উৎপাদন অনেকটাই কম হয়েছে এখন বাজারে হিমসাগর, গোপালভোগ ল্যাংড়া আম উঠেছে এই বছর ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে। এই আমগুলি খুব সুস্বাদু। এই অবস্থায় দেখা যায় আমগুলিকে পাকানোর জন্য কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়। আমরা এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে নিয়ে যথেষ্ট ভাবে সজাগ রয়েছি এবং মার্কেটগুলিতে ভিজিট করে আম চাষীদের বা ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। তবে আমাদের এই বিষয়ে আরো বেশি করে বাজারগুলির উপর নজর রাখতে হবে। এ বিষয়ে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের সর্বোপরি প্রধান ডাক্তার অভিজিৎ সাহা জানান, কার্বাইড দিয়ে পাকানো আম গুলি খেলে শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। এই আমগুলি খেলে শরীরে আলসার, লিভারের সমস্যা এমনকি ক্যান্সারও হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই আম খাওয়া যাবে না। কার্বাইড দিয়ে পাকানো আম কোন মতেই খাওয়া উচিত নয়।