উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ২৭ শে জুন ২০২২ : সোমবার : রয়্যালটি ইস্যূকে ঘিরে রেল এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের মতোবিরোধের জেরে আপাতত বিশ বাঁও জলে রমতি নদীকে নিয়ন্ত্রণ করে ঘিস নদীতে মিলিয়ে দেওয়ার রেলের পরিকল্পনা। গত ৫-৬ বছর ধরে ভরা বর্ষায় ডুয়ার্সের মানুষের কাছে নতুন এক আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে কালিম্পং পাহাড় থেকে নেমে আসা রমতি নদী। কালিম্পং জেলার পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হলেই রমতির প্রবল জলধারা একদিকে যেমন শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ার সেকশনের রেলপথের ক্ষতি করছে, সাময়িক ভাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবার নজিরও রয়েছে সাম্প্রতিক কালে। একইভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা যানবাহন চলাচল থমকে দিয়ে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর দিয়েও প্রবল বেগে বয়ে চলেছে রমতি। যার ফলে রেলযাত্রীদের পাশাপাশি ভুগতে হচ্ছে ডুয়ার্স-শিলিগুড়ি সড়কপথের অগনিত যানবাহন চালক ও যাত্রীদেরও।
গত কয়েকবছর ধরে বারবার একই পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ায় রেলের তরফে অবশেষে ঘিস রেল সেতু থেকে কালিম্পং পাহাড়ের একেবারে পাদদেশে যেখান থেকে রমতি নদী ঘিস নদীতে মিশে যাওয়ার পুরনো গতিপথ পাল্টে স্বতন্ত্র ভাবে বইতে শুরু করেছে ঠিক সেই স্থান পর্যন্ত ১৮০০ মিটার দীর্ঘ বাঁধ নির্মানের পরিকল্পনা গ্রহন করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলের এক বিভাগীয় ইন্জিনিয়ার জানিয়েছেন, বাঁধ নির্মানের সিদ্ধান্ত নেবার আগে রাজ্যের সেচ দপ্তরের সাথে এলাকায় জয়েন্ট সার্ভে করা হয়েছিলো। সেচ দপ্তর বিশাল এই বাঁধ তৈরির দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করার পর রেল নিজে থেকেই রেলওয়ে ট্র্যাক ও জাতীয় সড়ক রক্ষার জন্য কাজটি করবে বলে ঠিক হয়। সেই মতো টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে ১৮০০ মিটার দীর্ঘ বাঁধ তৈরির কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে একটি সংস্থাকে। কিন্তু মাত্র ৪৫০ মিটার বাঁধ নির্মান কাজ হতেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের সঙ্গে রেলের নির্মান বিভাগের রয়্যালটি ইস্যূতে মতোবিরোধ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তিনি বলেন, দু-পক্ষের মতবিরোধ মেটানোর চেষ্টা চলছে। এরই মাঝে বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় আপাতত বাঁধ নির্মান কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, বাঁধ তৈরির জন্য যে পরিমান, বালি, মাটি, পাথর ইত্যাদি ঘিস নদী থেকে তুলে ব্যবহার করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে তার বিনিময়ে সরকারি নিয়ম মেনে রয়্যালটি কাটতে হবে। কারন এগুলো রাজ্যের সম্পদ। রয়্যালটি না কেটে এই কাজ করা যাবে না। বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদারি সংস্থার ম্যানেজার সমীর সরকার জানিয়েছেন, দুই দপ্তরের মধ্যে মতানৈক্যের জন্য ১৮০০ মিটার বাধটি এখন হচ্ছে না। এখন সাড়ে চারশো মিটার বাঁধ হচ্ছে। তাই রমতি নদীর জল সেই পুরোনো খাদেই প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফল স্বরুপ পাহাড়ে ভারি বৃষ্টি হলেই এই জল জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে বইছে। ক্ষতি হচ্ছে জাতীয় সড়কের এবং রেল লাইনের। ঠিকাদার সংস্থার ইনচার্জ শিবা রায় বলেন, বাঁধটি ১৮০০ মিটার না হওয়ার কারনে রোমতি নদীর জলকে ঘীস নদীতে কনভার্ট করা গেলো না। যার ফলে সমস্যা থেকেই গেলো।