উত্তরবঙ্গ নিউজ : মালদা : ২ রা নভেম্বর ২০২২ : বুধবার : মালদহের গাজোলের বৈরগাছি-২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার খোসলাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ধনঞ্জয় সরকার খুনে অভিযুক্তরা এখনও অধরা। গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তের গাফিলতির অভিযোগ। যদিও খুনের ঘটনা এক সপ্তাহ পার। তবুও পুলিশ অভিযুক্তদের ধরছে না বলে অভিযোগ। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার অর্থাৎ ২৬ শে অক্টোবর গভীর রাতে ধনঞ্জয় সরকার নামে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রধানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। কিন্তু প্রাণ দিয়ে খেসারত দিতে হয় তাকে। খুন হন এবং তার রক্তাক্ত মৃতদেহ আম বাগানে পড়ে থাকে। এরপরই চিকিৎসার জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সে খানে মারা যান তিনি। পরিবারের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের প্রধান সুবোধ সরকার প্রাণ নাশের হুমকি দিতেন। তবে ঘটনার সূত্রপাত পুকুর খনন নিয়ে যে ব্যক্তি খুন হয়েছেন তাদের পুকুরের ভুয়ো মাস্টাররোল তৈরি করে ৪ লক্ষ ১২ হাজার আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ। এরপরেই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মামলা-মোকদ্দমা চলতে থাকে। কিন্তু সে সময় থেকেই বাড়িতে ঢুকে প্রান নাশের হুমকি দিয়েছিল বলে অভিযোগ প্রধান সুবোধ সরকার।
এদিকে, বুধবার মৃতের পরিবারের সাথে দেখা করতে যান জাতীয় এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার এবং সমস্ত ঘটনার বিবরণ তিনি শোনেন। পাশাপাশি তিনি পুলিশি তদন্তের নিষ্ক্রিয়তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও ঘটনার ৭ দিন কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত জেলা শাসক থেকে শুরু করে পুলিশ সুপার কেউ আসেননি বলে অভিযোগ। এই বিষয় নিয়ে তিনি তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। আগামী দিনে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে দিল্লিতে তলব করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, ঘটনার ৭ দিন কেটে গেলেও খুনিরা ধরা না পরায় তীব্র আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসীরা। সন্ধ্যার পর শুনশান হয়ে যাচ্ছে গোটা এলাকা। তাদের বক্তব্য এর আগেও ওই এলাকায় তিনটি খুনের ঘটনা ঘটলেও এখনো পর্যন্ত একটাও কিনারা হয়নি বলে অভিযোগ। গাজোল থানা পুলিশের তদন্তের উপর আস্থা হারাচ্ছেন তারা। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সঠিক পুলিশি তদন্ত না হলে আগামী দিনে তারা দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। এ বিষয়ে মৃতের ভাই প্রহ্লাদ সরকার জানান, গ্রামে রয়েছে প্রধান সুবোধ সরকারের বাড়ি তবে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন দাদা। কিন্তু তাকে প্রাণ দিয়ে খেসারত দিতে হয়েছে। আমরা সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি, কিন্তু পুলিশ কোন তদন্ত করছেন না বলে অভিযোগ। আজ জাতীয় কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার আমাদের সাথে দেখা করেন এবং সম্পূর্ণ ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। তবে এখন দেখার বিষয়, সঠিক পুলিশি তদন্তে দুষ্কৃতীরা কবে ধরা পড়ে সেদিকেই তাকিয়ে মৃতের পরিবারসহ গোটা গ্রাম।