উত্তরবঙ্গ নিউজ : জলপাইগুড়ি : মালবাজার : ১৪ ই নভেম্বর ২০২২ : সোমবার : প্রাপ্য সম্মানের দাবীকে সামনে রেখে সোমবার মালবাজার পৌরসভা ঘেরাও করলো শহরের পার্শ্ববর্তী বিধান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মাথাচুলকার গ্রামের তিন যুবক। প্রসঙ্গগত দশমীর সন্ধ্যায় মালনদীর ঘাটে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় এই তিন যুবক নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খরস্রোতা মাল নদীর গর্ভে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বহু ভেসে যাওয়া মানুষের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে। পরবর্তী সময়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাল শহরে এসে মালনদীর ঘাটে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় নিজেদের জীবনকে বিপন্ন করে উদ্ধারকার্যে যে সমস্ত যুবক ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তাদের সংবর্ধনা প্রদান ও চাকরি প্রদানের ঘোষণা শহরের আদর্শ বিদ্যাভবনের প্রশাসনিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই দিন উপস্থিত যারা হয়েছিলেন তাদের মধ্যে এই তিন যুবক তথা তরীফুল ইসলাম, মহ: ফরিদুল ইসলাম এবং অর্জুন মুন্ডা তাদেরকে ভেতরেই প্রবেশ করতে দেয়নি পুলিশ প্রশাসনের তরফে। সেদিন যে সমস্ত উদ্ধারকারীদের মুখ্যমন্ত্রী তরফ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছিল তাদের মধ্যে বাদ পড়েছিলেন এই তিন উদ্ধারকারী। পরবর্তী সময়ে এই বিষয়ে গোটা শহর সহ রাজ্যজুড়েই তোলপাড় হয়েছিল এই তিন উদ্ধার কারীর বাদ পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সেই সময় পৌরসভার তরফে এই তিন যুবককে পরবর্তী সময়ে তাদের প্রাপ্য সম্মান ও কাজের বিষয়টি সরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করা হয়েছিল বলেই দাবি উদ্ধারকারী যুবকদের। কিন্তু সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন না হওয়ায় সোমবার দুপুরে গ্রামের বহু মানুষকে সঙ্গে নিয়ে হাতে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে একটি মিছিল শহরের পৌরসভার কার্যালয়ে এসে উপস্থিত হয়।
পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে মাল থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী সেই মিছিলকে আটকে দেন। সেখানেই চলে স্লোগান এবং প্রাপ্য সম্মানের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন গ্রাম থেকে আশা সাধারণ মানুষের দল। এরপর পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে তিন উদ্ধারকারী যুবক সহ ছয় জনের একটি প্রতিনিধি দল পৌরসভার কার্যালয়ে প্রবেশ করে এবং চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন। এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফরিদুল ইসলাম, তরী ফুল ইসলাম এবং অর্জুন মুন্ডা বলেন, আমরা আমাদের প্রাপ্য সম্মান চাই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অন্যদের দিয়েছেন সেই সম্মানের দাবিদার আমরাও। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণেই সে দিনের নামের তালিকায় আমাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। আমরা যে উদ্ধারকার্যে নিজেদের নিয়োজিত করেছিলাম তারপর রাজ্যের মন্ত্রী তথা আমাদের মাল বাজারের বিধায়কসহ অন্যান্য ব্যক্তি এবং প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়ে এসেছিলেন। কাকতালীয় ভাবে সরকারি স্তরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়ার নামের তালিকায় আমাদের নাম বাদ পড়ে। সেই প্রাপ্য সম্মানের দাবী জানিয়েই আজকের এই পৌরসভা ঘেরাও। প্রসঙ্গগত মাল পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বলেন, আজ ওনারা তাদের প্রাপ্য সম্মান ও চাকরির দাবি নিয়ে আমার কাছে এসেছিলেন। বিষয়টি জলপাইগুড়ির জেলা শাসকের কাছে টেলিফোন মারফত জানিয়েছি। ওদেরকে লিখিত আকারে আবেদন জানাতে বলেছি সেই আবেদন পত্র মহকুমা শাসক সহ নবান্ন পর্যন্ত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।