কোচবিহার : দিনহাটা : ২৯শে মার্চ ২০২০, রবিবার : করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে যখন দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন কর্মসূচি। সেই সময় দিনহাটা মহকুমার কৃষিমেলা সেটেলমেন্ট ক্যাম্পের নব্য ভারতীয়রা কি অবস্থায় রয়েছেন? দেখতে আমাদের ক্যমেরা ধরা পরলো সেই ছবি। প্রসঙ্গগত, ভারত ও বাংলাদেশের চুক্তি মোতাবেক ২০১৫ সালের ৩১ শে নভেম্বরের মধ্য রাত থেকে বাংলাদেশে থাকা ভারতের ১১১ টি ছিটমহল বাংলাদেশের সাথে এবং ভারত থাকা বাংলাদেশের ৫১ টি ছিটমহল ভারতের সাথে যুক্ত হয়। সেই মোতাবেক বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় ছিটমহল থেকে সেই বছর নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ থেকে ২০১ টি পরিবারের মোট ৯২১ জন সদস্য ভারতবর্ষে চলে আসেন। তাদের বর্তমানে কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি, মেখলিগঞ্জ ও দিনহাটা মহকুমায় রাখা হয়েছে। দিনহাটা মহকুমার কৃষি মেলা সেটেলমেন্ট ক্যাম্পে ১৫৮ টি পরিবারে মোট ২৪৪ জন সদস্যদের রাখা হয়। তাদের মধ্যে কিছু সদস্য বাইরে চলে গেলেও বেশীর ভাগ সদস্য এই ক্যাম্পেই বর্তমানে বসবাস করছেন। প্রতি মাসে তাদের ২ থেকে ৫ জন পিছু পরিবারের রেশন বরাদ্দ ৩০ কেজি চাল ৫ কেজি মুসুরি ডাল, ৫ লিটার সর্ষার তেল, ৫ লিটার কেরোসিন তেল , ১ কেজি, ৫০০ গ্রাম লবণ ও ১ কেজি পাউডার দুধ। এই রেশন দিয়ে তাদের চলে না বলে দাবি বাসিন্দাদের। তাই তাদের অন্যত্র অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করতে হয়। কিন্তু যখন করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে যখন দেশজুড়ে লকডাউন চলছে।তারা ক্যাম্প থেকে বাইরে বেড় হতে পারছে না। বর্তমানে তাদের উপার্জন বন্ধ। তাই সরকারি সাহায্যের দাবি তুলছেন দিনহাটা মহকুমার বড়ো নাচিনা গ্রামের কৃষি মেলা সেটেলমেন্ট ক্যাম্পের নব্য ভারতীয়রা। এবিষয়ে কৃষিমেলা সেটেলমেন্ট ক্যাম্পের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন – “আমাদের ছিটমহলের মানুষ জনের অসুখ নেই। খুব ভালোই আছি,সুস্থ আছি। আমরা সরকারি আইন মেনে চলাফেরা করছি। আমাদের একটাই কথা ২১ দিন যে সরকার বন্ধ ঘোষনা করেছে। আমাদের মানুষজন মজুরী খেটে খায়। তাদের জমা জমি নাই,জমি হীন। এরা কি ভাবে চলতে পারে। তাদের জন্য সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে ভালো হতো।
যে রেশন আমরা বর্তমানে পাই তা দিয়ে হয়না। কাজ না করলে তো চলে না। তারমধ্যে কাজ সব বন্ধ, কি ভাবে চলে। আমাদের একটা ব্যবস্থা করলে ভালো হতো।” কৃষিমেলা সেটেলমেন্ট ক্যাম্পের বাসিন্দা ওসমান গনি এবিষয়ে বলেন “করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় রাজ্য এবং কেন্দ্র দুই সহকারী যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাদের আমরা ধন্যবাদ জানাই। তার মধ্য করোনা ভাইরাসের কারণে যে অবস্থা চলছে আমাদের ক্যাম্পের মানুষগুলো নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ। এরা আবদ্ধের মধ্যেই আছে। আমাদের জন্য এই ভাইরাস সম্পর্কে এটা এটা আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমাদের জন্য কি ব্যবস্থা আছে। খানাপিনার ব্যবস্থা বাড়তি কোনো সুযোগ সুবিধা আছে কিনা। যেহেতু আমাদের কোনো রোজগারের ব্যবস্থা নেই। অনেকেই কৃষি কাজের সাথে জড়িত। কিন্তু গ্রামগঞ্জে তো যাওয়া যাচ্ছে না। রেশন যেটা দিচ্ছে ওটা নির্দিষ্ট একটা সীমারেখা সেটা দিয়ে তো আর চলছে না। দিনহাটা কৃষিমেলা সেটেলমেন্ট ক্যাম্পের বাসিন্দা লক্ষী বালা মহন্ত এবিষয়ে বলেন – “আমরা বাইরে বেড় হতে পারছিনা। কাজকর্ম নাই। আমরা কৃষক মানুষ। না কাজকর্ম করলে কিভাবে চলি আমরা। শাক সবজি বা কিভাবে কিনি। খাদ্য খানাই বা কিভাবে কিনি। পয়সা না হলে কি করে কিনবো আমরা। সরকার থেকে কিছু আমাদের সাহায্য করা দরকার। ২১ দিন আমাদের ঘরে থাকতে হবে। এই ২১ দিন ভরা আমরা কি খাবো। পর আমরা কি খাবো কিভাবে চলবো।