জলপাইগুড়ি : ময়নাগুড়ি : ২৭শে জুলাই ২০২০ সোমবার : করোনার অতিমারীর কারনে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার ঐতিহ্যবাহী জল্পেশের শ্রাবণী মেলা। শ্রাবণ মাসের শুরুতে প্রতি রবিবার পুণ্যার্থীদের ভিড়ে জমে উঠতো জল্পেশের শ্রাবণী মেলা। এবছর করোনার অতিমারীর কারনে কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হলো এই মেলা। যদিও পুণ্যার্থীদের জন্য মন্দির খোলা থাকছে। তবে মুখে মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি মিলবে।
জলপাইগুড়ি জেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী মন্দির ময়নাগুড়ির জল্পেশ মন্দির। বছরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম মেলায় জমে ওঠে জল্পেশ মন্দির চত্বর। তবে শ্রাবণ মাসের শ্রাবণী মেলা সব থেকে বড় একটি মেলা। এখানে পুণ্যার্থীরা তিস্তা নদী থেকে জল নিয়ে পায়ে হেঁটে জল্পেশ মন্দিরে আসেন এবং পুজো দেন। এই সময় উত্তরবঙ্গের জেলা গুলি বাদেও বিভিন্ন রাজ্য এবং দেশ থেকেও পুণ্যার্থীরা আসেন পুজো দিতে। তবে এবছর যেভাবে করোনা থাবা বসিয়েছে এবং এর প্রকোপ ভয়াবহ হচ্ছে তাতে মন্দিরের পক্ষ থেকে মেলা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মন্দির ট্রাস্ট্রি বোর্ড এবং ব্যবসায়ীরা। এই মেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ব্যবসায়ীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীরা আসেন সরঞ্জাম বিক্রি করতে। কিন্তু এবার মেলা বন্ধ হওয়ায় তারাও বিপাকে পড়েছেন। তবে জল্পেশ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি এবং নাগরিক মঞ্চের পক্ষ থেকে কিছুদিন আগে পুণ্যার্থীদের মন্দিরে না আসার আবেদন জানান। এই প্রসঙ্গে জল্পেশ মন্দির কমিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক গিরিন্দ্র দেব বলেন, সরকারি কোনো নির্দেশ নেই মন্দির বন্ধ রাখার। মন্দির খোলা আছে পুণ্যার্থীরা আসবেন পুজো দেবেন। এতে কোনো বাধা নেই। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
জল্পেশে পুজো দিতে আসা এক পুণ্যার্থী বলেন, আমরা অনেকের মুখে শুনেছি পুজো দেওয়া যাবে না। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম মন্দির খোলা আছে এবং পুজো দিলাম। আমার ছোট ছেলের নামে মানত ছিলো। আরেক পুণ্যার্থী হিল্লোল সরকার বলেন, বাবার দয়ায় আজকে মন্দিরে বাবার দর্শন করলাম। ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করলাম। এই করোনার মহামারী থেকে আমাদের সকলকে মুক্ত করুক। এক ব্যবসায়ী কমল সরকার বলেন, এবছর অবস্থা খুবই খারাপ। এই অবস্থায় মন্দিরে পুণ্যার্থীরা আসছেন না। আমাদের একটা বড় ক্ষতি হচ্ছে।